পুঁজি বিনিয়োগ করে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ সমীচীন নয়: তথ্যমন্ত্রী

পুঁজি বিনিয়োগ করে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা কোনোভাবেই সমীচীন নয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Oct 2020, 10:20 AM
Updated : 29 Oct 2020, 10:20 AM

বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত ‘সংবাদপত্রের সংকট সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক সেমিনারে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, “এখানে গণমাধ্যমে অবশ্যই যে কেউ পুঁজি বিনিয়োগ করতে পারে।পুঁজি বিনিয়োগ করে যেকোনো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠা করতে পারে, সেটা কোনো অপরাধ নয়।

“কিন্তু পুঁজি যখন সেই গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইবে সেটি কোনোভাবেই সমীচীন নয়। এ ক্ষেত্রে সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।”

ব্যাংকের উদাহরণ দিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশে যারা ব্যাংকের পরিচালক, তারা পুঁজি বিনিয়োগ করে, ব্যাংকের পরিচালক কিন্তু সেই ব্যাংক থেকে কোনো লোন নিতে পারে না। সেই ব্যাংকের পরিচালন কিন্তু পাঁচ বছর পর পর পরিবর্তন করতে হয়।

“সুতরাং সংবাদ মাধ্যমেও পুঁজি যে কেউ বিনিয়োগ করতে পারে। পুঁজি বিনিয়োগের মাধ্যমে সংবাদপত্র তৈরি হওয়া ভালো, সেটি সংবাদ মাধ্যম বা গণমাধ্যম বিকশিত হওয়ার জন্য ভালো, কিন্তু সেটি যখন গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইবে সেটা কোনোভাবেই গণমাধ্যমের জন্য সহায়ক নয়। এই ক্ষেত্রে কি করা প্রয়োজন আমি মনে করি ভেবে চিন্তে আমাদের অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন।”

বর্তমান সরকারের আমলে গণমাধ্যমের বিকাশ সবচেয়ে বেশি হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, “আমরা যখন ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি তখন বাংলাদেশে দৈনিক পত্রিকার সংখ্যা ছিল সাড়ে চারশ। এখন সেটা সাড়ে বারোশতে উন্নিত হয়েছে, টেলিভিশনের সংখ্যা ছিল ১০টি এখন ৩৪টিতে উন্নিত হয়েছে, ৪৫টির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। রেডিও এখন ২২টির বেশি লাইসেন্স দেওয়া আছে।তখন হাতে গোনা কয়েকটি অনলাইন ছিল, এখন কয়েক হাজার অনলাইন বাংলাদেশে প্রচারে আছে। বাংলাদেশে প্রাইভেট টেলিভিশনের যাত্রা শুরু হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই।”

যে সকল পত্রিকা নিয়মিত বের হয় না তাদের কারণে গণমাধ্যমের সুষ্ঠু বিকাশ কতটুকু সহায়ক তা নিয়েও প্রশ্ন আছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।

“আমাদের দেশে দেখা যায় অনেক দৈনিক পত্রিকা নিয়মিত বের হয় না। হঠাৎ হঠাৎ বের হয় বা যেদিন বিজ্ঞাপন পায় সেদিন বের হয়। এসব প্রত্রিকা যেগুলো হঠাৎ হঠাৎ বের হয় সেগুলো আসলে গণমাধ্যমের সুষ্ঠু বিকাশে কতটুকু সহায়ক সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে।

“আমি মনে করি এগুলো নিয়ে একটা শৃঙ্খলা প্রয়োজন। কলকাতার দিকে যদি তাকান সেখানে ১০-১৫টি প্রত্রিকা বের হয়। আমরা তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি নীতিগত সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি, যেগুলো নিয়মিত বের হয় না, পত্রিকার ডিক্লারেশন নেওয়ার সময় কিন্তু নিয়মিত প্রচারের কথা বলা থাকে, সেই অনুযায়ী সেই পত্রিকাগুলোর ডিক্লারেশন বাতিলযোগ্য।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “সেখানে যে প্রচার সংখ্যা দেখানো হয় সেটা অনেকগুলো পত্রিকার ক্ষেত্রে সঠিক কিন্তু অনেকগুলোর ক্ষেত্রে বাস্তবতার সঙ্গে কোনো মিল নেই। এ ক্ষেত্রে একটি বাস্তবতার নিরিখে প্রচার সংখ্যা যাতে হয় সে নিয়েও আমরা কাজ করছি।”

ডিআরইউর রজতজয়ন্তী উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান শাজাহান সরদারের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।