বায়ু চলাচলের যথেষ্ট পথ রেখে ভবন তৈরির সুপারিশ

করোনাভাইরাসের মতো ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বাড়ি বানানোর সময় আলো বাতাস চলাচলের যথেষ্ট পথ রাখার জন্য প্রকৌশলীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এক আলোচনা সভা থেকে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Oct 2020, 02:00 PM
Updated : 22 Oct 2020, 03:06 PM

'শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্থান ও কোভিড-১৯ : বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে আশু করণীয়’ শীর্ষক ভার্চুয়াল এই আলোচনা অনুষ্ঠান হয় আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির উদ্যোগে।

সভার স্বাগত বক্তব্যে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর বলেন, বিশ্ব আজ করোনাভাইরাস মহামারীতে বিপর্যস্ত। সে দিক থেকে বাংলাদেশে পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো রয়েছে।

“এখন দেখা যাচ্ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্থানগুলোতে বিভিন্ন কারণে করোনাভাইরাস বেশি ছড়াচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের কী কী করণীয় তা আমাদের গবেষকরা বিস্তারিত তুলে ধরবেন।”

ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস ইউনিভার্সিটির গবেষক বিকাশ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, কোনো ভাইরাসের ড্রপলেট যত বড় হয়, তত তাড়াতাড়ি তা নিচে পড়ে যায়। কিন্তু ড্রপলেট যদি ছোট হয়, তাহলে এটা বাতাসে ভেসে বেড়াবে।

“এসি করোনাভাইরাস ছড়ায় না। তবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্থানের বাইরে থেকে কোনো ভাইরাস যদি ভেতরে চলে আসে, তাহলে সেই ভাইরাস দ্রুত যেন বাইরে বের করা যায় তার ব্যবস্থা থাকতে হবে। যার জন্য পর্যপ্ত ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা থাকা জরুরি।”

তিনি বলেন, “বিভিন্ন ধরনের ফিল্টার রয়েছে, যেগুলো দিয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্থানের জীবাণু বাইরে বের করে আনা সম্ভব। যথাযথ প্রক্রিয়ায় এসি ইনস্টল করলে বাতাস জীবাণুমুক্ত ও নিরাপদ থাকবে।”

বিকাশ মণ্ডল বলেন, কোনো স্থাপনার ভেতরের বাতাস যদি বাইরের বাতাস দিয়ে দ্রুত পরিবর্তন করা হয়, তাহলে প্রায় ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত জীবাণু বের করে ফেলা সম্ভব।

“প্রতি ঘণ্টায় ১০ বার করে বাতাস পরিবর্তন করলে ৩১ মিনিটের মধ্যে বাতাস নিরাপদ করা সম্ভব। তবে এসব কিছুই ইন্টেগ্রেটেড অর্থাৎ সমন্বিত উপায়ে করতে হবে।”

আলোচনায় যোগ দিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, “আমাদের দেশে নতুন নতুন যেসব বিল্ডিং, হাসপাতাল, মার্কেট তৈরি হচ্ছে সেখানে হয়ত এইচভিএসি কিছুটা হলে স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ডিজাইন হচ্ছে, কিন্তু পুরনো স্থাপনাগুলো সেভাবে তৈরি করা নয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে বিল্ডিং করা হয়েছে এক উদ্দেশ্যে কিন্ত সেটি ব্যবহার করা হচ্ছে অন্য কাজে যেমন প্রাইভেট ক্লিনিক, গার্মেন্টস ইত্যাদি। কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা এই সব ক্ষেত্রে অত্যন্ত বেশি।”

যে ভবনগুলো তৈরি হয়ে আছে, সেখানে কীভাবে ঝুঁকি এড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা দেখতে প্রকৌশলীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং উপকমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর, সঞ্চালনা করেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)'র সহকারী সাধারণ সম্পাদক মো. রনক আহসান। 

ওয়েবিনারে কানাডার ডালহৌসি ইউনিভার্সিটির গবেষক রবার্ট বাকাইনস্কি, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি ও বুয়েটের সাবেক সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. হাবিবুর রহমান এবং অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবুল হোসাইন আলোচনা করেন।

এই ওয়েবিনার থেকে প্রাপ্ত সুপারিশমালা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটি ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে বলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সবুর জানিয়েছেন।