ঢাকা ও নওগাঁয় উপনির্বাচনে নৌকার দুই প্রার্থী জয়ী

ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনের উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী মনিরুল ইসলাম মনু ও মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল জয়ী হয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Oct 2020, 05:20 PM
Updated : 17 Oct 2020, 05:38 PM

ইভিএমের এ ভোটে ঢাকায় ১০.৪৩ শতাংশ ভোট পড়েছে। আর নওগাঁ-৬ আসনের উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে ৩৬.৪৯ শতাংশ। 

ঢাকা-৫ এ কার কত ভোট

ঢাকা-৫ উপনির্বাচনের ফলাফল রাত পৌনে ১০টায় দনিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে স্থাপিত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ঘোষণা করেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম সাহতাব উদ্দিন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী কাজী মনিরুল ইসলাম মনুকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন তিনি।

রিটার্নিং অফিসার জানান, ইভিএমের এ ভোটে ৪৫ হাজার ৬৪২ ভোট পেয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কাজী মনিরুল ইসলাম মনু। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির সালাহ উদ্দিন আহমেদ পেয়েছেন দুই হাজার ৯২৬ ভোট।

অন্য প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মীর আব্দুস সবুর ৪১৩, আম প্রতীকে এনপিপির আরিফুর রহমান সুমন মাস্টার ১১১ এবং ডাব প্রতীকে বাংলাদেশ কংগ্রেসের আনছার রহমান শিকদার ৪৯ ভোট পেয়েছেন।

মোট ভোটারের ১০ দশমিক ৪৩ শতাংশ ভোট পড়েছে; চার লাখ ৭১ হাজার ৭১ জনের মধ্যে ভোট দিয়েছেন মাত্র ৪৯ হাজার ১৪১ জন।

সাংসদ হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যুতে এ আসন শূন্য হয়।

নওগাঁ-৬ এ কার কত ভোট

এ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেনকে (হেলাল) বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান।

তিনি জানান, নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেন (হেলাল)  পেয়েছেন ১,০৫,৫২১ ভোট।

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীকে শেখ মো. রেজাউল ইসলাম পেয়েছেন ৪,৬০৫ ভোট।

আর এনপিপি প্রার্থী আম প্রতীকে খন্দকার ইন্তেখাব আলম ১,৮১৬ ভোট পেয়েছেন।

ভোটের হার ৩৬.৪৯%।

ইসরাফিল আলমের মৃত্যুতে এ আসন শূন্য হয়।

‘খণ্ড নির্বাচনে’ উপস্থিতি কম

নির্বাচন কমিশনের সব প্রস্তুতির পরও উপনির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার কারণ হিসেবে করোনাভাইরাস মহামারীর পাশাপাশি ‘খণ্ড নির্বাচন’ নিয়ে মানুষের আগ্রহ কম হওয়ার কথা বলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।

শনিবার তুলনামূলক কম উপস্থিতির মধ্যে ইভিএমের মাধ্যমে ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনের উপনির্বাচন ‘সুষ্ঠু’ হয়েছে বলে জানান তিনি।

সিইসি বলেন, “নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। দুই উপনির্বাচনে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ নেই। কোথাও কোন অসুবিধার সৃষ্টি হয়নি।

“করোনার জন্য আমরা সার্বিক সুরক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

এক প্রশ্নের জবাবে কে এম নূরুল হুদা বলেন, “জাতীয় নির্বাচনে সারা দেশে ভোট হয়। এই খণ্ড নির্বাচনে ভোটারদের আগ্রহ কম থাকে। দুই বছর/আড়াই বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন সেই জন্য হয়ত প্রার্থী বা ভোটারদের মধ্য তেমন আগ্রহ নেই। পাশাপাশি করোনার একটি বিষয় তো রয়েছে। এজন্য মানুষ আতঙ্কিত- এ রকম একটা অবস্থা তো আছেই। এর মধ্যেও নির্বাচনের ট্রেন্ড ভালো।”

শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা নাগাদ একটানা ভোট চলে দুই উপনির্বাচনে।

গেল ২১ মার্চ ঢাকা-১০ আসনের উপ নির্বাচনে মাত্র ৫% ভোট পড়েছিল। তবে মহামারীর মধ্যে ঢাকার বাইরে ব্যালট পেপারে উপনির্বাচনে ৫৫% থেকে ৬৫% ভোট পড়েছে।

ভোট প্রত্যাখ্যান বিএনপি প্রার্থীর

ঢাকা-৫ আসনের উপনির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট প্রত্যাখ্যান করেছেন বিএনপির প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ।

ভোটগ্রহণ শেষের দিকে এক সংবাদ সম্মেলন তিনি বলেন, “আজকে ভোট হয়নি। প্রায় সব কেন্দ্রেই আমাদের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে এজেন্ট ঢুকেছে তাদেরও বের করে দেওয়া হয়েছে।

“প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের জানালেও তারা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। আমরা নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বার বার অবহিত করেছি, তিনি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। আপনাদের মাধ্যমে আমরা এ অনিয়মে জর্জরিত অবৈধ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করছি এবং পুনঃনির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।”

নির্বাচনী প্রচারণার সময় হামলার মুখে পড়ার ঘটনাবলী তুলে ধরে সালাহউদ্দিন আ্হমেদ বলেন, “আমি এই নির্বাচনের প্রথম দিন থেকে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের দ্বারা বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়েছি। এমনকি আমি মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছি সেখানেও আমাকে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমার তো জন্মগত অধিকার এ এলাকার কোনো মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়া এবং তাদের কাছে ভোট চাওয়া, দোয়া চাওয়া। সেটাও আমাকে করতে দেওয়া হয়নি।

“আমরা যখন গণসংযোগে গিয়েছি জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দিয়েছে এবং তখনই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। তাদের সন্ত্রাসীরা আমাদের নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেছে।”

ভোটে অনিয়মের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “আপনারা দেখেছেন দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের দুই মহিলা এজেন্ট বোনকে অপদস্ত করে বের করে দেওয়া হয়েছে। আর কে মিশন চৌধুরী স্কু্লে আমাদের আরেক নারী এজেন্টের উপর হামলা করে বের করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি তার গায়ে হাতও দেওয়া হয়েছে।”