ধর্ষণ মামলার বিচার নিয়ে মান্নার প্রশ্ন

ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধান আসার পর এ ধরনের মামলার বিচার সঠিকভাবে হবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Oct 2020, 10:22 AM
Updated : 14 Oct 2020, 11:10 AM

বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি বলেন, “এখন যে আইন করেছেন, আমি প্রথম দাবি করছি, নোয়াখালীর সূবর্ণচরে যে মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল ভোট দেবার কারণে, ভোটের ব্যাপারে ভূমিকা রাখবার কারণে, সিলেট এমসি কলেজ এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ঘটনার বিচার অবিলম্বে করা হোক।

“সমস্ত বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে করতে হবে। দুই লক্ষ ধর্ষণের মামলার বিচার করা হয় নাই। ওইগুলো বিচার কতদিনের মধ্যে করবেন, ঘোষণা করেন। আমি দাবি করছি, আগামী তিন মাসের মধ্যে সমস্ত ধর্ষণের যে বিচার, সেটা যেন সমাপ্ত করা হয়।”

সারাদেশে ধর্ষণ ও খুনের মূল হোতাদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের দাবিতে জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দলের উদ্যোগ এই মানববন্ধন হয়।

ধর্ষণ মামলায় সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড করার প্রসঙ্গ টেনে মান্না বলেন, “আসলে কি ধর্ষণ মামলার বিচার করতে পারবেন? মামলা করবেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। মামলার যে রায় হবে, ধর্ষকরা তার বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে। হাই কোর্টে যদি কিছু বলে, তারপরে যাবে আপিল বিভাগে ছয় মাস, নয় মাস। শেষ পর্যন্ত তামাদি হয়ে যাবে।মেজর সিনহা হত্যার বিচারের কথা এখন আর কেউ বলছেন না।

“আমাদের দাবি ধর্ষণ বন্ধ হতে হবে। এটা আপনার দায়িত্ব, আপনাকে আমরা আদর করে, ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসাইনি। গায়ের জোরে ক্ষমতায় বসেছেন, জোর করে ক্ষমতায় আছেন। আপনার আমলে আপনার লোকেরা ধর্ষণ চালাচ্ছে। বিচার আপনাকেই করতে হবে।”

ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার পর ক্ষমতাসীন দলের আনন্দ মিছিলের সমালোচনা করে মান্না বলেন, “ধর্ষণের শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মৃত্যুদণ্ডে রূপান্তরিত করা হয়েছে বলে আনন্দ মিছিল, একটা মামলার বিচার আজ পর্যন্ত শেষ করতে পারেনি। আনন্দ মিছিল যারা করেছে ওরা দালাল, ওরা দালালি করছে।”

নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যে কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আজকে পত্রিকায় লেখেছেন, আলু ভর্তা খাওয়া এখন খুব কঠিন। কেন? আলুর দাম এতো বেশি, পেঁয়াজের দাম এতো বেশি, মরিচের দাম এতো বেশি। কোনো দাম কমাতে পারেন না।”

সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “জনগণের কল্যাণ করার মতো কোনো কাজ এখন পর্যন্ত করতে পারেন নাই। জিনিসের দাম কমাতে পারেন না, মানুষকে স্বস্তি দিতে পারেন না। এখন পর্যন্ত মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতে পারেন না… কিছুই করতে পারেন না, অথচ ক্ষমতা আঁকড়ে রয়েছেন আপনারা ।”

ভোটে দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ফরিদপুরের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরীর গালাগাল ও হুমকির ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, “এক কর্মকর্তা ফরিদপুরে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। সেই কারণে সেখানকার এমপি সাহেব যে কি রেগে গেছেন, আর কি রকম করে ওইখানকার এসি ল্যান্ডকে গালাগালি করেছে তার ভিডিও শুনেছেন না? কোনো ভদ্রলোক, কোনো এমপি এইভাবে একজন মহিলার সামনে মুখ খারাপ করে কথাবার্তা বলতে পারে? বিচার চাই তার।

“ইলেকশন কমিশন বলেছে আমরা বিচার করব। আর এবং আমরা এই বিচার দেখার জন্যে অপেক্ষা করছি।”

মানববন্ধনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, জিয়া নাগরিক ফোরামের মিয়া মো. আনোয়ার, ইসমাইল হোসেন সিরাজী, আলতাফ হোসেন সরদার প্রমুখ বক্তব্য দেন।