কামাল হোসেন কাউন্সিলে না এলে বিকল্প নেতৃত্ব: মন্টু

কামাল হোসেন আগামী ডিসেম্বরের কাউন্সিলে যোগ না দিলে গণফোরামের বিকল্প নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দলটির একাংশের নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Oct 2020, 12:26 PM
Updated : 3 Oct 2020, 01:53 PM

শনিবার বিকালে কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির প্রথম বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।

কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মন্টু বলেন, “ড. কামাল হোসেন শ্রদ্বেয় ব্যক্তিত্ব। উনি গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা, আমি গণফোরামে প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন। দলে যে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে তার জন্য ২৬ ডিসেম্বর কাউন্সিল হতে যাচ্ছে। এই কাউন্সিলে উনি (কামাল হোসেন) যোগ দেবেন বলে আমরা প্রত্যাশা করতে চাই।

“কাউন্সিলে নেতা নির্বাচন করবে কাউন্সিলররা। কাউন্সিলররা যদি উনাকে নেতা নির্বাচন করেন আমরা বিনা দ্বিধায় তার সাথে কাজ করব কর্মী হিসেবে। আর উনি যদি না আসেন তাহলে সারা দেশের কাউন্সিলররা বিকল্প নেতৃত্ব ঠিক করবেন। কারণ সংগঠন তো একটা জায়গায় বসে থাকতে পারে না।”

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়ার সঙ্গে মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী ও আবু সাইয়িদদের বিরোধের জেরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টভুক্ত দলটি এখন ভাঙনের মুখে। কামাল হোসেনের অনুপস্থিতিতে গত ২৬ সেপ্টেম্বর দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত সভা করে আগামী ২৬ ডিসেম্বর জাতীয় কাউন্সিলের ঘোষণা দেন তারা। পাশাপাশি রেজা কিবরিয়াসহ চার নেতাকে বহিষ্কারেরও ঘোষণা দেন মন্টু-সুব্রতরা।

গণফোরামের বিগত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, “আমরা দেশে গণতন্ত্র চর্চার কথা বলি। সেজন্য আমাদের দলে সেই কাজটি শুরু করতে চাই। আমরা আশা করব, গণফোরাম যে আদর্শ ও দর্শন নিয়ে ১৯৯৩ সালে ২৯ অগাস্ট যাত্রা শুরু করেছিল সেটা সম্মুন্নত রাখতে আমরা সকলে সম্মিলিতভাবে সম্মেলনের জন্য কাজ করব।

“আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, গুলশানভিত্তিক সংগঠন পরিচালনা কিংবা ব্যক্তিকেন্দ্রিক সংগঠনের কাজ মেনে নেওয়া হবে না।”

আর গত মার্চে বিলুপ্ত কমিটির নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বলেন, “আমাদের গঠনতন্ত্রের ১৪ ধারায় বলা আছে, কাউকে বহিষ্কার করতে হলে, দল থেকে দূরে রাখতে হলে এবং নিষ্ক্রিয় করে দিতে হলে এবং নিষ্ক্রান্ত করতে হলে সেখানে কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত সভার সেই ক্ষমতা আছে এবং কোনো ব্যক্তি তিনি যত বড়ই হোক না কেন, যে পদেই থাকুক না কেন তার সেই এখতিয়ার নেই।

“বর্ধিত সভায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চারজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ড. কামাল হোসেনকে আমরা বহিষ্কার করিনি। উনিও কাউকে বহিষ্কার করতে পারেন না, অন্য কেউ পারেন না বর্ধিত সভা ছাড়া। গণমাধ্যমকে বলতে চাই, আমরা গঠনতন্ত্র মোতাবেক চলব, নিয়মতান্ত্রিক মোতাবেক চলব, সেই নিয়মতান্ত্রিক গঠনতন্ত্রের বাইরে স্বেচ্ছাচারিতার কোনো প্রশ্রয় আমরা দেব না, কর্তৃত্বাবাদী কোনো সিদ্ধান্ত আমরা নেব না। আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় চলব।”

আরামবাগে ইডেন কমপ্লেক্স এলাকায় গণফোরামের কার্যালয়ে সম্মেলন প্রস্তুতির এই সভা হয়। সভায় ১৪ টি সাব-কমিটি গঠন করা হয়।

সারা দেশে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে আগামী ১৭ অক্টোবর সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন মোস্তফা মহসিন মন্টু।

ব্রিফিংয়ে গণফোরামের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিক, খান সিদ্দিকুর রহমান, আবদুল হাসিব চৌধুরী, মহিউদ্দিন আবদুল কাদের, হেলাল উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

আহ্বায়ক কমিটির সভা ডেকেছেন ড. কামাল

গণফোরামের বিদ্রোহীদের ‘গঠনতান্ত্রিক’ বর্ধিত সভার পর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সভা ডেকেছেন ড. কামাল হোসেন।

১৭ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সভা হবে বলে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া জানিয়েছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সকাল সাড়ে ১০টায় আমরা এই সভা শুরু করব। গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন। কারণ করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে আমরা আমাদের নেতাকে সেইভ রাখতে চাই।

“এই আহ্বায়ক কমিটির কিছু কাজ রয়েছে, সাংগঠনিক কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া আছে যা আমরা এই সভায় অনুমোদন করব।”

ড. কামাল হোসেন অনুমোদিত ৭০ সদস্যের এই আহ্বায়ক কমিটি ১২ মার্চ গণমাধ্যমের পাঠানো হয় বলে ড. রেজা কিবরিয়া জানান।