পাবনায় বাধা পাচ্ছে বিএনপির নির্বাচনী এজেন্টরা: রিজভী

পাবনা-৪ আসনে উপনির্বাচনে বিএনপির এজেন্টদের ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Sept 2020, 07:09 AM
Updated : 26 Sept 2020, 07:09 AM

শনিবার পাবনায় ভোটগ্রহণ শুরুর আড়াই ঘণ্টা পর ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

ঈশ্বরদী ও আটঘরিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত পাবনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর মৃত্যুতে উপনির্বা্চন হচ্ছে। এই আসনে বিএনপির প্রার্থী দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব।

নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, “বিএনপির কোনো এজেন্টকে ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ভোট কেন্দ্রের বাইরে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ভোটারদেরও ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছে না। শুধু আওয়ামী সন্ত্রাসীদেরকে ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছে।”

ভোটের আগে থেকেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের ধরপাকড় চলছিল বলে অভিযোগ করেন রিজভী।

“ভোটের দুই দিন আগ থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদেরকে গ্রেপ্তার করা শুরু হয়েছে। আটঘরিয়া থানায় তিনটি এবং ঈশ্বরদী থানায় তিনটি গায়েবী মামলা দায়ের করে পুলিশি অভিযানের নামে বিএনপির নেতা-কর্মীদের এলাকাছাড়া করা হয়েছে।”

বিএনপির ঈশ্বরদী থানার যুগ্ম আহবায়ক কল্লোল, পাকশী ইউনিয়নের বিপ্লব, সলিমপুর ইউনিয়নের যুগ্ম আহবায়ক অহিদুল ও আবদুল হাইসহ ১৫/২০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়ছে জানিয়ে তাদের মুক্তি দাবি করেন তিনি।

চাঁদপুর সদর পৌরসভার নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ধানের শীষের প্রার্থীসহ সমর্থকদের উপর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হামলার নিন্দাও জানান রিজভী।

‘তথ্যমন্ত্রীর উদ্ভট বক্তব্য’

পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের সঙ্গে বিএনপির ‘দহরম-মহরম বহু পুরনো’- তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন রিজভী।

তিনি বলেন, “হঠাৎ করে তথ্যমন্ত্রীর উদ্ভট বক্তব্যে জনগণের মনে ঘোরতর সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। মনে হয়, তার মন্ত্রিত্ব এখন টালমাটাল অবস্থায় আছে। আওয়ামী মন্ত্রীদের বিচারবুদ্ধি নিয়ে জনগণের মাঝে নানা কথা প্রচলিত আছে।

“তারা যখনই খুব বিচলিত ও বেকায়দায় পড়ে, তখনই তারা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আবিষ্কার করে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আওয়ামী মন্ত্রীদের কপালে দুঃশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে আওয়ামী লীগের মুরব্বী পরিবর্তন নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। সব কূল হারিয়ে সরকার মনে হয় স্বস্তিতে নেই।”

“বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা এড়াতেই তথ্যমন্ত্রী বিদেশে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আবিষ্কার করেছেন। তথ্যমন্ত্রী হাওয়া থেকে পাওয়া তথ্য দিতেই পারঙ্গম,” বলেন রিজভী।

বিএনপিকে নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন রিজভী।

তিনি বলেন, “বিএনপি অলি-গলি খুঁজবে কেন? বিএনপি তো অবৈধ সরকার পতনের জন্য প্রশস্ত রাজপথেই আন্দোলন করছে। ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের মাধ্যমে রাজোচিত জীবন নির্বাহ যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্যই ওবায়দুর কাদের সাহেবরা কানা গলি দিয়ে কখনও বিনা ভোটে, কখনো নিশিরাতের ভোটে ক্ষমতায় আছে।

“অলি-গলি ওবায়দুল কাদের সাহেবদেরকেই অবলম্বন করতে হয়, বিএনপির নয়। বিএনপির শক্তি জনগণ, রাজপথই বিএনপির শক্তি।”  

সংবাদ সম্মেলনে রিজভীর সঙ্গে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সাহিদা রফিক, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, হারুনুর রশীদ, আমিনুল ইসলাম, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, কৃষক দলের শাহজাহান মিয়া সম্রাট, স্বেচ্ছাসেবক দলের একেএম আবুল কালাম আজাদ।