বিএনপির মুখে গণতন্ত্র, অন্তরে ষড়যন্ত্র: কাদের

সরকারকে সরাতে বিএনপি ‘গোপন বৈঠক’ করছে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মুখে নির্বাচন আর গণতন্ত্রে কথা বললেও বিএনপি নেতারা অন্তরে ‘ষড়যন্ত্র’ লালন করেন।"

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2020, 01:43 PM
Updated : 24 Sept 2020, 01:43 PM

বৃহস্পতিবার ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের।

তিনি বলেন, "বিএনপি এবং সাম্প্রদায়িক অপশক্তি একটি বিদেশি সংস্থা গোপনে বৈঠক করে বাংলাদেশে সরকার পতনের ষড়যন্ত্র করছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ এসেছে। তারা বিদেশে বসে সরকার পতনের জন্য ষড়যন্ত্র করে, আবার দেশে নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা বলে।

“এ থেকে বিএনপির দ্বি-চারিতা এবং ষড়যন্ত্রের রাজনীতি স্পষ্ট হয়। মুখে নির্বাচন আর গণতন্ত্র, অন্তরে দ্বি-চারিতা আর ষড়যন্ত্র- এটাই বিএনপির রাজনৈতিক দর্শন।”

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, "কখনো জেদ্দা, কখনো আবুধাবি- যেখানেই যোপন বৈঠক করুক, সব খবরই সরকার পায়। আমরা বলতে চাই, গোপন বৈঠক আর ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ নেই। রাজনীতি করতে হবে জনগণের জন্য। সরকার পরিবর্তন করতে চাইলে জনমানুষের কাছে আসুন, বিদেশি শক্তি বা কোনো সংস্থার কাছে নয়।"

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে জনগণের মাঝে ‘উদাসীনতা’ দেখা দিয়েছে মন্তব্য করে এ বিষয়ে সতর্ক করেন সেতুমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “ভ্যাকসিন আসছে ভেবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে অনেকের মাঝে গা ছাড়া ভাব দেখা দিয়েছে। অনেকে অবহেলা করছেন এবং মাস্ক পরিধান করছে না। কার্যকর ও সর্বজনগ্রাহ্য ভ্যাকসিন কবে আসবে তা এখনও সুনিশ্চিত নয়।”

আসন্ন শীতে সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকির বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের শঙ্কার কথা তুলে ধরে কাদের বলেন, "সরকার এ লক্ষ্যে ঝুঁকি মোকাবিলায় নতুন করে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং মাস্ক পরিধান করাই সবচেয়ে বড় প্রতিষেধক। করোনা সংক্রমণ রোধে সচেতনতাই হচ্ছে উত্তম ভ্যাকসিন।"

পদ্মা সেতুর আগে কালনা সেতুর কাজ শেষ করার তাগিদ

নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর পুরো সুবিধা পেতে হলে তার আগেই গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার কালনা ফেরিঘাটে মধুমতি নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ শেষ করতে অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় তাগিদ দেন সেতুমন্ত্রী।

তিনি বলেন, "জাপান আমাদের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী। জাপান সরকারের অর্থায়নে সড়ক যোগাযোগ খাতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। জাইকার অর্থায়নে যেসকল প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে তার মধ্যে ক্রস বর্ডার অন্যতম।”

তিনি জানান, প্রায় ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকার এ প্রকল্পের আওতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বপূর্ণ ১৭টি সেতু নির্মাণের কাজ বিভিন্ন কারণে বিলম্বিত হলেও এখন পুরোদমে কাজ চলছে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৩০ শতাংশ।

"এর আওতায় নির্মাণাধীন প্রায় ৭০০ মিটার দীর্ঘ কালনা সেতু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেতু। মধুমতি নদীর দুপাড়ের মানুষের মাঝে সেতুবন্ধ তৈরি করা ছাড়াও এ সেতুটি পদ্মা সেতুর সাথে সংযুক্ত হবে। পদ্মা সেতুর সুবিধা পেতে হলে তার আগেই কালনা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করা জরুরি”

ইতোমধ্যে সেতুটির ৩৫ শতাংশ কাজ শেষ হলেও মহামারীর কারণে লক্ষ্য থেকে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “মার্চের পর তেমন কোনো অগ্রগতি ছিল না অফিসিয়াল ওয়ার্ক ছাড়া।"

পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে জানিয়ে কাদের বলেন, "পদ্মার কাজের সাথে সমন্বয় রেখে কালনার নির্মাণ কাজ আরো দ্রুত এগিয়ে নিতে হবে। আমি প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করার আহ্বান জানাচ্ছি।"