মঙ্গলবার সকাল বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে দোয়েল চত্বর হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে সমাবেশ করে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা।
ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন বলেন, “গতকাল আমরা যখন মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করি, তখন একদল রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, আমাদের ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। আমাদের দমন করতে কাঠ, হকিস্টিক ও রড দিয়ে হামলা চালিয়েছে। ডাকসুর ভিপি নূরসহ আমাদেরকে অনেকে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
“কিন্তু আমরা দমে যাইনি, আমরা রাজপথে আছি, থাকব। আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, হামলা-মামলার ভয় দেখিয়ে এদেশের মানুষকে দমন করা যাবে না।”
“আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে চাই, আমরা যদি অপরাধী হয়ে থাকি, আমরা স্বেচ্ছায় গ্রেপ্তার হতে রাজি আছি। গ্রেপ্তারের ভয় দেখাবেন না।”
তিনি বলেন, “আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে চাই, কী কারণে গতকাল ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূরসহ আমাদের উপর হামলা করা হল? ছাত্র সমাজকে এই উত্তর আপনাকে দিতে হবে।
“আমরা বলতে চাই, এই ছাত্র অধিকার পরিষদের ভিত্তি হচ্ছে, এদেশের মানুষের ভালোবাসা। অবিলম্বে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন।”
ডাকসুর সাবেক সমাজ সেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, “হামলা-মামলা এই প্রথম নয়, আরও অসংখ্য বার এ ধরনের হামলা-মামলার মুখোমুখি হতে হয়েছে আমাদের। কিন্তু শত হামলা-মামলা করেও আমাদের দমিয়ে রাখা যায় নাই।
“গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল শেষে আমাদের সহযোদ্ধারা যখন নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরতে চেয়েছে, তখন পুলিশ পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে বর্বরতার পরিচয় দিয়েছে। এতে এটা স্পষ্ট, সরকার আমাদের দাবায়ে রাখতে নীলনকশা তৈরি করেছে।”
সোমবার রাতে ঢাকায় এক বিক্ষোভ মিছিল থেকে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ও তার সাত সহযোগীকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। ধর্ষণের অভিযোগে এক তরুণী মামলা করার পর তা ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে এই বিক্ষোভ করছিল নূরের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে বের হওয়া মিছিলটি মৎস্য ভবন এলাকায় পৌঁছলে পুলিশের সঙ্গে গোলযোগ বাঁধে। নূরসহ সাতজনকে সেখানে আটক করে পুলিশ। পরে রাত ১টার দিকে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয় ডিবি পুলিশ।
রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের স্নাতকোত্তর শ্রেণির এক ছাত্রী লালবাগ থানায় নূরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
মামলার প্রধান আসামি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হাসান আল মামুন, যিনি ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন। নূর এই পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক।
পরিষদের আরও দুই যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ (২৮) ও সাইফুল ইসলাম (২৮), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা (২৫) ও কর্মী আবদুল্লাহ হিল বাকিকে (২৩) মামলাটিতে আসামি করা হয়েছে।
তবে সমাবেশে বক্তারা এই মামলাকে ‘মিথ্যা, হয়রানিমূলক ও যড়যন্ত্রমূলক’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান।