নিউমোনিয়ার মধ্যে হার্ট অ্যাটাক হওয়ায় তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান তার মেয়ে অনন্যা লাবণী।
অনন্যা লাবণী তার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে বুধবার বিকালে লিখেছেন, “আমার বাবা হায়দার আনোয়ার খান জুনো গতকাল ১৫ সেপ্টেম্বর রাত হতে সিভিয়ার নিউমোনিয়া ও পরবর্তীতে হার্ট আ্যটাক নিয়ে স্কয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি আছেন। তার অবস্থা ক্রিটিক্যাল ও আনস্টেবল। হার্ট, লাং ও কিডনির ডাক্তারদের তত্ত্বাবধানে আছেন। সবাই ওনার জন্য প্রার্থনা করবেন।”
৭৬ বছর বয়সী জুনো কমিউনিস্ট নেতা হায়দার আকবর খান রণোর ছোট ভাই।
জুনোর জন্ম ১৯৪৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর কলকাতায়; তার পৈতৃক নিবাস নড়াইলের বরাশুলা গ্রামে। তার বাবা হাতেম আলী খান ছিলেন একজন প্রকৌশলী। তার নানা প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ সৈয়দ নওশের আলী।
জুনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিদ্যায় এমএসসি ডিগ্রি নিলেও রাজনীতিকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। স্কুল জীবনেই তিনি কমিউনিস্ট রাজনীতির দীক্ষা নিয়েছিলেন।
পাকিস্তান আমলে ১৯৬২ সালে শিক্ষা আন্দোলনে যুক্ত হয়ে কারাবরণ করেন তিনি। তখন তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তার ভাই রণো তখন ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি। পরে জুনো ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।
ষাটের দশকেই কমিউনিস্ট আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে জুনো, তিনি ছিলেন চিনপন্থি শিবিরে।
১৯৭০ সালে তিনি বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়ন গঠিত হলে এর সভাপতির দায়িত্ব নেন তিনি।
স্বাধীনতার পর জুনো লেনিনবাদী কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৪ সালে তিনি ইউনাইডেট পিপলস পার্টির (ইউপিপির) সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক হন।
১৯৭৯ সালে ওয়ার্কাস পার্টি গঠিত হলে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন তিনি।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে গেরিলা হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন জুনো। পদার্থ বিজ্ঞানের ছাত্র জুনো তখন বোমা তৈরির কাজ করছিলেন। নরসিংদীর শিবপুরে প্রয়াত আব্দুল মান্নান ভূইয়াদের সঙ্গে প্রতিরোধ যুদ্ধে জুনোও ছিলেন।
জুনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি প্রগতিশীল গণমুখী সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলতেও অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন।
গণ-সংস্কৃতি ফ্রন্টের সভাপতি ছিলেন তিনি। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ কিউবা সংহতি কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।