খালেদার মুক্তিতে বিদেশে না যাওয়ার শর্ত ‘অমানবিক’: বিএনপি

অসুস্থ খালেদা জিয়ার সাময়িক মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হলেও ‘দেশে থেকে’ চিকিৎসা নেওয়ার যে শর্ত তাকে দেওয়া হয়েছে, তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Sept 2020, 09:56 AM
Updated : 9 Sept 2020, 09:56 AM

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, “চিকিৎসার জন্য তার বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করাটা অমানবিক বলে আমরা মনে করি। সুচিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে তিনি যাতে বিদেশে যেতে পারেন, সে ব্যাপারে যে বিধি নিষেধ, সেটা প্রত্যাহার করাটা মানবিক একটা কর্ম বলে আমরা মনে করি। এটা আমাদের দাবি।”

জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার নেতাকর্মীদের নিয়ে শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন নজরুল।

দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গত ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে ছয় মাসের জন্য সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার।

এরপর থেকে গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিতসকদের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৭৫ বছর বয়সী খালেদা। বহু বছর ধরেই আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন তিনি।

সাময়িক মুক্তির মেয়াদ শেষ হতে আরও কিছুদিন বাকি থাকলেও খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার গত ২৭ আগস্ট মেয়াদ বাড়াতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। সেই আবেদন আইন মন্ত্রণালয় যায় পরীক্ষার জন্য।

এরপর আইন মন্ত্রী আনিসুল হক গত ৩ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়ার দণ্ডের কার্য্কারিতা আরও ৬ মাসের জন্য স্থগিত রাখার বিষয়ে সম্মতিসূচক মতামত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

“আমাদের অভিমত আমরা দিয়েছি।… শর্ত হচ্ছে তিনি আগে যে শর্তে ছিলেন, অর্থাৎ বাসা ও দেশে থেকে চিকিৎসা নেবেন।”

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “তার বয়স প্রায় ৭৬ বছর, তিনি দারুণভাবে অসুস্থ আমরা সবাই জানি। তাকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে হয়েছে এবং তার উন্নত চিকিৎসা নেওয়া দরকার। দীর্ঘদিন তিনি হাসপাতালে ছিলেন, কিন্তু সুস্থ হতে পারেন নাই।

“আমরা মানবিক বাংলাদেশ চাই। তার সুচিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে তাকে বাইরে নিতে হবে। তিনি যাবেন কি যাবেন না, যাওয়ার প্রয়োজন হবে কি হবে না- সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু সরকারি আদেশে তার বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করাটা অমানবিক বলে আমরা মনে করি।”

সরকারের সমালোচনা করে এই বিএনপি নেতা বলেন, “একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধে আমাদের স্বপ্ন ছিল- একটা স্বাধীন শুধু নয়, একটা গণতান্ত্রিক, একটা মানবিক, এটা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আমাদের স্বাধীনতার এতবছর পরে আমরা এদেশে একদলীয় শাসন দেখেছি, সামরিক স্বৈরশাসন দেখেছি, বেসামরিক স্বৈরাশাসনও দেখছি। ফলে এদেশে গণতন্ত্র বলতে যা বোঝায়, তার যথাযথ বাস্তবায়ন এখনো হয় নাই।”

‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে’ মহিলা দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, নিলোফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আখতার, ইয়াসমীন আরা হক, পিয়ারা মুস্তফা, শামসুন্নাহার ভুঁইয়া এ সময় নজরুল ইসলাম খানের সঙ্গে ছিলেন। জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তার বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।