হামলাকারী যেই হোক, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে: কাদের

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের ‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Sept 2020, 09:08 AM
Updated : 4 Sept 2020, 09:08 AM

শুক্রবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, ওয়াহিদা খানম ও তার বাবার ওপর হামলার ঘটনাটি ‘অপ্রত্যাশিত, অনাকাঙ্ক্ষিত এবং খুবই দুঃখজনক।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সু-চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে কাদের বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও ‘প্রকৃত অপরাধীদের’ খুঁজে বের করতে কাজ করে যাচ্ছে।

ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম

“অপরাধী যেই হোক, প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেছেন, তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সারা দেশে প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারে।”

বুধবার রাতে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসে ইউএনওর বাসভবনের ভেন্টিলেটর দিয়ে বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর হামলা হয়। হামলাকারীর হাতুড়ির আঘাতে গুরুতর আগত ওয়াহিদা এখন ঢাকার জাতীয় নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্রবার ভোরে হাকিমপুর উপজেলার কালীগঞ্জ থেকে স্থানীয় এক যুবলীগ নেতাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

মহামারী

সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার গত কিছুদিনে কমে এলেও এ ভাইরাস ‘খুব তাড়াতাড়ি চলে যাবে’- এমন মনে করার কোনো কারণ নেই।

“বাংলাদেশের শহরে বন্দরে মার্কেটে রাস্তায় কোথাও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। মনে হয় না, কেউ করোনাকে পাত্তা দিচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক, আমরা নিজেরাই নিজেদের সেইফটি নষ্ট করছি এবং করোনাভাইরাসের সংক্রমণের দুয়ার খুলে দিয়েছি।”

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “আজকে দেশবাসীর আস্থার ঠিকানা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা... তার দক্ষ নেতৃত্বে পরিস্থিতি এতদিন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সচেতনতার দিক থেকে গা-ছাড়া ভাব পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যেতে পারে। কাজেই সচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”

খালেদা জিয়া প্রসঙ্গ

‘মানবিক দিক বিবেচনা করেই’ বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সাজা আবারও ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, “চিকিৎসার দিক বিবেচনা করে মানবিক কারণে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল ছয় মাসের জন্য। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে চিকিৎসা ভালোভাবে করা যায়নি। সেটা বিবেচনা করে তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর হয়েছে। এটায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি আছে। এখানে কোনো রাজনৈতিক চাপের বিষয় নেই। একেবারে মানবিক কারণে সেই সিদ্ধান্ত।”

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজায় কারাজীবন শুরু করেন খালেদা জিয়া। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজার রায় হয়।

পরিবারের আবেদনে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গত ২৫ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে নির্বাহী আদেশে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার।

ওই মুক্তির মেয়াদ ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই পরিবারের পক্ষ থেকে আবারও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়।

এর ধারাবাহিকতায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বৃহস্পতিবার জানান, খালেদা জিয়ার দণ্ডের কার্যকারিতা আরও ছয় মাসের জন্য স্থগিত রাখার বিষয়ে সম্মতিসূচক মতামত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।        

আরও পড়ুন: