‘অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা’ আরেক কালাকানুন: রিজভী

মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালাকে দেশের গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের আরেকটি কালাকানুন বলেছেন বিএনপি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2020, 09:18 AM
Updated : 3 Sept 2020, 09:18 AM

বৃহস্পতিবার দুপুরে এক দোয়া মাহফিলে তিনি বলেন, “প্রতিনিয়ত এই গণবিরোধী সরকার এমন এমন আইন করছে যাতে কোনোভাবে বিরোধীকণ্ঠ বাতাসে ভেসে না যায়। গত সোমবার তারা জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা করে তা আইন করার জন্য অনুমোদন দিয়েছে। অর্থাৎ টেলিভিশন থাকবে কিন্তু তার যদি অনলাইন ভার্সন বা নিউজ পোর্টাল থাকে তাহলে তার জন্য আলাদা রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এটা একটা কন্ঠরোধ।

“পত্রিকাগুলোরও তাই। পত্রিকাগুলোতে যেসব খবর ছাপা হচ্ছে, তার অনলাইন ভার্সন থাকলে তার জন্যও আলাদা রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এরকম কালাকানুনের বন্ধনের মধ্যে শুধু আটকেয়ে রাখো, শুধু আটকাও, নিয়ন্ত্রণ করো, যত পারো নিয়ন্ত্রণ করো- তারই একটি দৃষ্টান্ত হল জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”

গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা-২০২০’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয় ।

খসড়া নীতিমালায় শুধু স্বতন্ত্র অনলাইন নিউজ পোর্টালই নয়, টেলিভিশন, বেতার ও ছাপা পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণ এবং আইপি টিভি ও ইন্টারনেট রেডিও চালাতে হলেও সরকারের কাছ থেকে নিবন্ধন নেয়ার বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে।

সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “বিধি-নিষেধের বেড়াজালের মধ্যে আটকাতে আটকাতে তারা একেবারে বাকশালের যে চূড়ান্ত রূপ- এক দল, এক দেশ, এক নেতা, যেটা করেছিল ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি। শেখ হাসিনা পিতার একদলীয় নীতির সেই এক দল, এক নেতা, এক দেশ ও একটি পত্রিকা- সেই ধারাতে তিনি চলে আসছেন। চূড়ান্ত চেহারায় আত্মপ্রকাশ করছেন তিনি এই গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে।

“কারণ এরা হল চেতনা সন্ত্রাস, এরা হল ভোট সন্ত্রাস, এরা হল লুটেরা সন্ত্রাস। এখন আরেকটা সন্ত্রাস যুক্ত হয়েছে পাচার সন্ত্রাস। মানব পাচার আর টাকা পাচার। এই যে এতোগুলো সন্ত্রাস তারা তাদের অঙ্গে ভূষণ হিসেবে নিয়েছেন, এটা ঢাকা দেয়ার জন্য গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার কোনো বিকল্প নেই- এই নীতি নিয়ে আজকে শেখ হাসিনা দেশ চালাচ্ছেন। তিনি মনে করছেন এভাবে টিকে থাকা যায়।”

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় ঢাকা কলেজ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল পরিবারের উদ্যোগে সদ্য প্রয়াত কলেজের ছাত্র নেতা আবদুল আউয়াল খান ও শফিউল বারী বাবুর স্মরণে এই দোয়া হয়।

ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপুর সভাপতিত্বে ও ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সজিবের পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে বিএনপির আসাদুল করিম শাহিন, আবদুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, হারুনুর রশীদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, সাদরেজ জামান, যুবদলের কামাল আনোয়ার, ঢাকা কলেজের সাবেক ছাত্রনেতারা বক্তব্য রাখেন।