প্রতিশ্রুতি পূরণে আ. লীগ নেতাদের দায়িত্বশীল হতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

দেশকে এগিয়ে নিতে সরকারের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি পূরণে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিষয়ভিত্তিক দায়িত্ব পালনে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2020, 10:19 AM
Updated : 2 Sept 2020, 10:19 AM

বুধবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর যৌথসভায় যুক্ত হয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, "প্রত্যেকে যার যার বিষয়ভিত্তিক দায়িত্বটা পালন করা দরকার। নির্বাচনী ইশতেহারে যে ঘোষণাগুলো দিয়েছি, পাশাপাশি আমরা আমাদের যে পলিসি আছে, সেগুলো নিয়ে বসা, আলোচনা করা। আমরা প্রতিশ্রুতি কতটুক রক্ষা করতে পেরেছি সেই বিষয়ে আলোচনা করা।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নে সরকার কিছু দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রথম যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল, সেটি ছিল ২০১০ থেকে ২০২০- এই দশ বছর মেয়াদী। আর নতুন প্রেক্ষিত পরিকল্পনার মেয়াদ ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত।

“বাংলাদেশকে আমরা কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, সেই প্রেক্ষিত পরিকল্পনা আমাদের পার্টির প্রত্যেক নেতার দেখা উচিত এবং এখানে বিষয়ভিত্তিক যেটা আছে সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা দেখে নিন… কীভাবে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।”

করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে ‘জীবন বাজি রেখে মানুষের কল্যাণে কাজ করায়’ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, "এটাই হচ্ছে আমাদের কাজ। জাতির পিতা আমাদের এটাই শিখিয়েছেন। এটাই তার আদর্শ।"

মহামারীর মধ্যে থমকে যাওয়া দলের সাংগঠনিক তৎপরতা আবার গতিশীল করার তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, "এখন সংগঠনকে সুসংগঠিত করতে হবে। করোনার কারণে অনেক জায়গায় সম্মেলন হলেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি। এখন সেগুলোর পূর্ণাঙ্গ করার ব‌্যবস্থা নিতে হবে। ঐক‌্যবদ্ধ থেকে নির্বাচনে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে হবে।"

মহামারীর সঙ্কটে গত অর্থবছর দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে গেলেও দেশের অর্থনীতি ‘ভালো অবস্থানে আছে’ বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ বারবার আমাদের ভোট দিয়েছি। আমরা বংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম। আজকে আমাদের রিজার্ভ ৩৯.৪০ বিলিয়ন ইউএস ডলার। আমাদের প্রবৃদ্ধি ৮.২ ভাগ টার্গেট করেছিলাম, এপ্রিল পর্যন্ত আমরা ৭.৮ অর্জন করেছিলাম, কিন্তু করোনার কারণে কমে গেছে। এরপরও অর্থনৈতিকভাবে আমরা একটা ভালো অবস্থানে আছি।”

তিনি বলেন, "আমরা প্রণোদনা দিয়েছি। একশ অর্থনেতিক অঞ্চল করেছি। সেখানে আমরা বিনিয়োগ আনতে চাই। সেখানে আমরা সুযোগ তৈরি করে দিয়েছি। কাজেই আমরা অর্থনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি। সেটা যাতে যথাযথভাবে কার্যকর হয় এবং সারাদেশে যে উন্নয়নের কার্যক্রম নিয়েছি, সেটা যাতে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয়, সেটা আমাদের দেখতে হবে।”

বাংলাদেশকে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণের দৃঢ় সংকল্পের কথা তুলে ধরে তার মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “ভূমিহীন মানুষকে ভূমি ও গৃহ আমরা করে দেব। কোনো এলাকায় এমন কেউ থাকলে তাদের খুঁজে বের করতে হবে, যাদের ভিটা আছে ঘর করার টাকা নাই, তাদেরও আমরা সহযোগিতা করে যাচ্ছি।”

ঢাকা বিশ্ববিদ‌্যালয়ের টিএসসি ও হল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, পাবলিক লাইব্রেরি, শহীদ মিনার, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রশিক্ষণ ভবনসহ আরো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের আধুনিয়কায়নের পরিকল্পনা নেওয়ার কথাও প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন।

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে বাংলাদেশের ‘অকৃত্রিম বন্ধু’ হিসেবে বর্ণনা করে তার আত্মার শান্তি কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন। সে কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ‘সীমিত আকারে’ জন্মদিন পালনের অনুমতি চান।

প্রধানমন্ত্রী তখন বলেন, "জন্মদিন পালনের দরকার নেই। আমি এমনিতেই জন্মদিন পালন করি না।"

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামল হোসেনসহ সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্যরা দলীয় কার্যালয়ে এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।