জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে সোমবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিয়ের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এই আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, “দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির পিতার আদর্শ বুকে নিয়ে ছাত্রলীগের মূল মন্ত্র ধারণ করে তোমরা এগিয়ে যাবে, সেটাই আমি চাই। ত্যাগের মধ্য দিয়েই শান্তি, ভোগের মধ্যে না। এই কথাটা সব সময় মনে রাখবে। জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে যদি চল, দেশের মানুষকে কিছু দিতে পারবে।”
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনে ত্যাগের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, জাতির পিতা শুধু দিয়েই গেছেন, কিছু নিয়ে যাননি।
মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতার আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট তাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার কথাও বলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
বিদেশে অবস্থান করায় ওই সময়ে প্রাণে বেঁচে যাওয়া শেখ হাসিনা বলেন, “মাত্র ১৫ দিন আগে দেশ ছেড়ে বিদেশে গিয়েছিলাম। মাত্র দুই মাসের জন্য আমাদের যাওয়া। তারপর আমরা শুনলাম আমাদের কেউ নেই। আমরা নিঃস্ব, সব আমাদের শেষ। বিদেশে আমাদেরকে রিফিউজি হিসেবে থাকতে হল। ছয়টা বছর পর যখন আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করলে, আমি ফিরে এলাম।”
জিয়াউর রহমানের শাসনামল দেশে ফেরার পর বঙ্গবন্ধু ভবনে ঢুকতে না পারার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।
মা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে থাকতেন, তখন তার কাছ থেকে বার্তা নিয়ে তা ছাত্রলীকে পৌঁছে দিতেন তার মা।
“সব সময় ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করা, ছাত্রলীগকে সহযোগিতা করা এবং ছাত্রলীগের মাধ্যমেই আমার বাবা যেই বার্তাগুলো দিতেন জেলখানা থেকে সেগুলো পৌছে দেওয়া সেই কাজটাই তিনি খুব সুচারুভাবে করে দিতেন। প্রয়োজনে তিনি নিজে বোরখা পরে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে ছাত্রলীগের সাথে দেখা করার জন্য, নেতাদের সাথে দেখা করার জন্য বিশেষ করে ছয় দফা দেবার পর যখন ৭ই জুনের হরতাল সেই হরতালের যেই আয়োজন সেই আয়োজন করবার জন্য এবং এই আন্দোলনটাকে গড়ে তোলা। সমস্ত কাজগুলো তিনি করেছিলেন।”
জাতির পিতা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে খুনি ও তাদের সহযোগীদের মিথ্যা-বানোয়াট কুৎসা রটনার করার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য।
নবীন প্রজন্মের প্রতি লক্ষ্য রেখে আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ছাত্রলীগের প্রকাশনা ‘মাতৃভূমি’র মোড়কও উন্মোচন করেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচায্য এই আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।