ইসি নিজেদের স্বাধীনতা সমর্পণ করেছে: রিজভী

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধন করে নির্বাচন কমিশন প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা ছেড়ে দিলে তা ‘আত্মঘাতী’ হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী।  

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 August 2020, 11:59 AM
Updated : 28 August 2020, 11:59 AM

তিনি বলেছেন, “তারা (নির্বাচন কমিশন) নিজেরা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেরাই নিজেদেরকে একেবারে… আমি যেটা বলব হিজরায় পরিণত করছেন। হিজরা- না পুরুষ না মেয়ে।”

শুক্রবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক দোয়া মাহফিলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভীর এমন মন্তব্য আসে।

বিরোধিতা ও বিতর্কের মধ্যেই স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তর ও পদ-পদবির নাম পরিবর্তনসহ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিশেষ অংশ নিয়ে নতুন আইনের খসড়ায় বৃহস্পতিবার অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯১ই ধারার ১ ও ২ উপধারায় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে, তা তদন্ত করে দেখা এবং তদন্তে তা প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করার সরাসরি যে ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের হাতে আছে, সেটি বাদ দেওয়ার কথাও ওই খসড়ায় এসেছে বলে একজন নির্বাচন কমিশনার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

এর সমালোচা করে রিজভী বলেন, “গণতন্ত্র মিন করলে পরে নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন সার্বভৌম সত্তা।… সংবিধান তাদেরকে (ইসি) দায়িত্ব দিয়েছে এই স্বাধীনতার, তাদের এটা নিজস্ব স্বাধীনতা। কেউ কি নিজের স্বাধীনতা খর্ব করে? আজকে নির্বাচন কমিশন স্বেচ্ছায় সমর্পণ করেছেন নিজেদের স্বাধীনতা সরকারের কাছে।”

নির্বাচন কমিশনের এই ক্ষমতাকে এখন ‘সরকার নিজের হাতে রাখবে’ মন্তব্য করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “প্রয়োজন হলে যদি কথা কেউ না শোনে, তাহলে বলবে- তুমি বাদ। ওই আইন এমন হবে, শেখ হাসিনা হবেন অখণ্ড ক্ষমতার অধিকারী। বিএনপি কথা শুনছেন না? ওর রেজিস্ট্রেশন বাদ, ওমুক দল কথা শুনবে না তো ওর রেজিস্ট্রেশন বাদ।”

টিআইবিও যে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করেছে, সে প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, “তার মানে বোঝেন, বাকশাল কীভাবে ক্রমান্বয়ে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। বাকশাল মানে কী? বাকশাল মানে একদলীয় শাসন, বাকশাল মানে অন্যের কোনো কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে না, গণমাধ্যম থাকবে না, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থাকবে না। কেউ যদি সরকারের সমালোচনা করে তাহলে জননিরাপত্তা আইনে তাকে আটকে রাখা হবে।”

নির্বাচন কমিশনের অধিকারকে ‘ছিনতাই করে’ সরকার তা ‘নিজের হাতে’ নিতে চাইছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্নুজান হল ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি দিলরুবা শওকতের মৃত্যুতে রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ন্যাশনালিস্ট এক্স স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (রুনেসা) উদ্যোগে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় এই দোয়া মাহফিলের আয়োজন হয় এদিন।

বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন শওকতের স্ত্রী দিলরুবা ক্যান্সারে আক্রান্ত গত ১ অগাস্ট মারা যান।

দিলরুবাসহ সাম্প্রতিক সময়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া নেতা-কর্মীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত হয় মিলাদ শেষে।

রুনেসার সভাপতি অধ্যক্ষ বাহাউদ্দিন বাহারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মল্লিক মো. মোকাম্মেল কবিরের পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রমেশ দত্ত, আমিনুল ইসলাম, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, রুনেসার নুরুজ্জামান মানিক, অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান তপন, ইশতিয়াক আহমেদ রাফি, মাহবুব আলম ফরহাদ বক্তব্য দেন।

জাসাসের জাহেদুল আলম হিটো, কৃষক দলের মেহেদি হাসান পলাশ, জাহাঙ্গীর আলম, রুনেসার  মতিয়ার রহমান মতি দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন।