১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বিপথগামী কিছু সেনা সদস্যের হাতে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নিহত হয়েছিলেন বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। দিনটিকে শোক দিবস হিসেবে পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলগুলো। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ প্রথম ক্ষমতায় আসার পর দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হয়।
তবে ২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এসে ১৫ অগাস্টকে জাতীয় শোক দিবস বাতিল করে। ওই দিনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে বিরাট আয়োজনে কেক কেটে উদযাপন করে দলটি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর আবারও রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় শোক দিবস পালন শুরু হয়।
তবে তখনও ১৫ অগাস্ট প্রথম প্রহরে অর্থাৎ ১৪ অগাস্ট রাত ১২টা ১ মিনিটে কেক কেটে জন্মদিন পালন করছিলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছিলেন।
পরে ২০১৬ সাল থেকে দিনটিতে আর খালেদার জন্মদিনের কেক কাটা হয় না। ১৫ অগাস্টে দোয়া মাহফিলের কর্মসূচি জানিয়ে বৃহস্পতিবার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পাঠিয়েছেন সেখানে খালেদার জন্মদিনের প্রসঙ্গই উল্লেখ করা হয়নি।
রাতে রিজভী স্বাক্ষরিত ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আরোগ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা, দেশবাসী ও দলের নেতাকর্মী যারা করোনাসহ অন্যান্য রোগে মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও অসুস্থদের আশু সুস্থতা কামনা এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বানভাসী মানুষদের দুর্দশার হাত থেকে রেহাই পেতে আগামী ১৫ অগাস্ট শনিবার জাতীয়তাবাদী দলের উদ্যোগে ঢাকা মহানগরসহ দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে দলের নেতাকর্মীদের দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।”
দুর্নীতির দুই মামলায় কারাদণ্ডে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন। পুরান ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে থাকাকালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে বছরখানেকের মাথায় তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া প্রায় বছরখানেক বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হলে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এরপর থেকে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজায়’ অনেকটা কোয়ারেন্টিনে আছেন খালেদা জিয়া। তার বাসায় নেতাকর্মীদের প্রবেশে কড়াকড়ি রয়েছে।
বিএনপি নেতাদের ভাষ্য মতে, শারীরিকভাবে অসুস্থ খালেদা জিয়া অন্যের সহযোগিতা ছাড়া হাঁটতে পারেন না। নিজে নিজে খাবার খেতেও তার সমস্যা হয়।