বিদেশগামীদের নমুনা পরীক্ষায় দরকার যৌক্তিক সময়: কাদের

বিদেশগামীদের করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় একটি যৌক্তিক সময় ঠিক করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 July 2020, 10:57 AM
Updated : 24 July 2020, 11:02 AM

শুক্রবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, বিদেশগামীদের নমুনা পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে পরীক্ষা কেন্দ্র। এক্ষেত্রে ৭২ ঘণ্টা আগে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। কিন্তু নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে দীর্ঘ লাইন একদিকে বিদেশগামীদের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত তারা থাকে উদ্বেগে।

“কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, নমুনা দেওয়ার পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে সংক্রমিত হলে তা বিদেশে নমুনা পরীক্ষায় ধরা পড়তে পারে, তখন প্রাপ্ত সনদ কাজে আসবে না বা বিশ্বাসযোগ্য হবে না। তাই বিদেশগামীদের নমুনা পরীক্ষায় একটি যৌক্তিক সময় নির্ধারণ করা দরকার।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী নমুনা গ্রহণ এবং রিপোর্ট প্রদান করে তাদের উদ্বেগ কমানোর জন্য স্বাস্থ্যবিভাগের নজর দেওয়া জরুরি। পাশাপাশি নমুনা দেওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘ অপেক্ষার পরিবর্তে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন এবং বিদেশগামীদের জন্য বুথের সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে।

“রিপোর্ট প্রদানের ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ না করে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের রিপোর্ট আগে বা স্বল্প সময়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে।”

আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটি করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সামগ্রী ও বণ্যার্ত জেলায় ত্রাণ বিতরণের এই আয়োজন করে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিশ্বের প্রতিটি দেশই চেষ্টা করে যাচ্ছে সংক্রমণ রোধে। প্রতিটি দেশেরই সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সমৃদ্ধশালী দেশগুলো মহামারী নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। বাংলাদেশও মহামারী নিয়ন্ত্রণে এবং জনগণকে সুরক্ষা দিতে নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রাণান্ত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার সীমাবদ্ধতা দূর করে সংক্রমণ রোধ, চিকিৎসা নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ, অসহায় ও কর্মহীনদের সুরক্ষা এবং চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ অব্যাহত রাখতে নিরলস কাজ করছে। কিন্তু আমাদের প্রয়োজন প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা।”

“এ মহামারী থেকে সুরক্ষায় সচেতনতাই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার- এ সত্যকে উপলব্ধি করতে হবে। ঘরের বাইরে গেলে মাস্ক পরিধান সরকার বাধ্যতামূলক করেছে। সামাজিক দূরত্ব তথা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সচেতনতা দূর্গ গড়ে তোলার মাধ্যমে আমাদের নিজকে, পরিবার এবং সমাজকে সুরক্ষা দিতে হবে,” বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, “করোনাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যখন বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে, তখন বিএনপি মানুষের পাশে দাঁড়ানো তো দূরের কথা উল্টো মানবিক সংকটকে পুঁজি করে বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে অপরাজনীতিতে লিপ্ত রয়েছে। যারা দুর্যোগ-দুর্বিপাক ও সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না, কেবল বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে মানুষের অনুভূতি নিয়ে খেলা করে, তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।

“আন্দোলন ও নির্বাচনে প্রত্যাখ্যাত হয়ে তারা অপরাজনীতির অন্ধকারের গিরিখাতে দিকভ্রান্ত পথহারা পথিকের মত প্রলাপ বকতে শুরু করেছে। নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার ও চাতুর্যপূর্ণ কথামালা ব্যবহার করে প্রেস ব্রিফিং নির্ভর গলাবাজির রাজনীতি করছে বিএনপি।”

বৈশ্বিক মহামারী ও দূর্যোগ মোকাবেলা এবং অর্থনৈতিক গতিশীলতা পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই উল্লেখ করে কাদের বলেন, “করোনার এই সংকটে মানুষের জীবন-জীবিকা সচল রাখতে, খাদ্যের অভাবে মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী একের পর এক জনকল্যাণমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্যোগ মোকাবিলায় অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বাংলাদেশ এখন অনেক শক্তিশালী।”

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক আর না থাকুক দেশের যেকোনো সংকট ও দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে থাকে, আর এটাই আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য।”

সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, “দেশের এই সংকটে বিএনপি কোনো কার্যক্রমে নেই, তারা প্রেস ব্রিফিং করা ছাড়া আর কিছুতেই নেই।”

আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ।