এরশাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে ছিলেন সুবিধাভোগীরাই: জি এম কাদের

এইচ এম এরশাদের শাসনামলে ‘সুবিধাভোগীরাই’ নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 July 2020, 06:12 PM
Updated : 15 July 2020, 06:12 PM

এরশাদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার বনানীতে পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় জি এম কাদের এ মন্তব্য করেন বলে দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এরশাদের মৃত্যুর পর দলের হাল ধরা তার ছোট ভাই কাদের বলেন, “হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছিলেন একজন সফল মানুষ। তিনি উপজেলা পরিষদ সৃষ্টি করে শহরের সেবা তৃণমূল মানুষের দোর গোড়ায় পৌঁছে দিয়েছেন।

“বিচার ব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণ করে উপজেলা পর্যায়ে মুন্সেফ কোর্ট এবং বড় বড় শহরে হাই কোর্টের বেঞ্চ গঠন করেছিলেন। ঔষধ নীতি করে বাংলাদেশের ঔষধ শিল্পের বিকাশে অবদান রেখেছেন। আবার স্বাস্থ্য ও শিক্ষানীতি করে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চেষ্টা করেছিলেন।”

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “কোটি মানুষের জন্য নানা কল্যাণময় কাজ করলেও কিছু সুবিধাভোগী মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। সুবিধাভোগীরাই এরশাদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিলেন।“

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচিত-সমালোচিত এরশাদ সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় আশির দশকে অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে আট বছর দেশ শাসন করে ১৯৯০ সালে গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন।

নানা কেলেঙ্কারি আর রাজনীতিতে একের পর এক ‘ডিগবাজি’ দিয়ে আলোচিত এরশাদ বিতর্কের মধ্যেও টিকে ছিলেন রাজনীতিতে। সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় গত বছর ১৪ জুলাই এরশাদের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি অধ্যায়ের অবসান ঘটে।

তার মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব নিয়ে স্ত্রী রওশন এরশাদ এবং ভাই জি এম কাদেরের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। দলের জ্যেষ্ঠ নেতারাও দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়েন।

পরে সমঝোতার মাধ্যমে রওশনকে সংসদে বিরোধী দলীয় নেতার আসনে বসিয়ে পার্টি চেয়ারম্যানের চেয়ার নিজের কাছেই রাখেন জিএম কাদের।

দলের নবম কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে রওশন এরশাদের জন্য নতুনভাবে ‘প্রধান পৃষ্ঠপোষক’ পদ সৃষ্টি করা হয়। তবে দলের নির্বাহী ক্ষমতা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের হাতেই থাকে।

জাপার দ্বন্দ্ব দমাতে রওশনপন্থিদের সিনিয়র কো চেয়ারম্যান, কো চেয়ারম্যানের পদ দেন জি এম কাদের। নতুন পদে আসীন হওয়ার পর জাপার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সভায় দেখা গিয়েছে রওশনপন্থি নেতা আনিসুল ইসলাম, ফখরুল ইমাম, মুজিবুল হক চুন্নু, লিয়াকত হোসেন খোকাদের। তবে একটি সভাতেও আসেননি প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ।

বুধবারের অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ বলেন, “একটি মহল পার্টিতে বিভেদ সৃষ্টি করতে চায়। জাতীয় পার্টি যেন এগিয়ে যেতে না পারে সেজন্য ষড়যন্ত্র চলছে।”

জাতীয় যুব সংহতি ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা আয়োজিত এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ফজলুল হক ফজলু।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, যুগ্ম মহাসচিব ও জাতীয় যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আহসান শাহজাদা, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, ঢাকা মহানগর উত্তর যুব সংহতির সদস্য সচিব মঞ্জুরুল হক মঞ্জু অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।