ইতালির ঘটনা বিরূপ হবে প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য: ওয়ার্কার্স পার্টি

কোভিড-১৯ সনদ কেলেঙ্কারির মধ্যে ইতালিতে বাংলাদেশি যাত্রীদের নামতে না দিয়ে ফেরত পাঠানোর ঘটনায় বিশ্বে প্রবাসী কর্মীদের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2020, 03:50 PM
Updated : 10 July 2020, 03:50 PM

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক এ দলটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শুক্রবার বলা হয়, পলিটব্যুরোর সভায় এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পার্টির নেতারা।

“প্রধানমন্ত্রী যেখানে রেমিটেন্স প্রবাহ অক্ষুণ্ন রাখতে প্রবাসী শ্রমিকদের চাকরি বহাল রাখতে বিশ্বের দেশগুলোর সহায়তা চেয়েছেন, সেখানে এ ধরনের ঘটনা বাংলাদেশের শ্রমিকদের সম্পর্কে বিদেশে অবিশ্বাস ও সন্দেহ সৃষ্টি করছে।“

বাংলাদেশ থেকে করোনাভাইরাস ‘নেগেটিভ’ সনদ নিয়ে গত সপ্তাহে ইতালিতে যাওয়া যাত্রীদের কয়েকজনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়লে দেশটির সরকার এক সপ্তাহের জন্য কড়াকড়ি আরোপ করে। 

এর মধ্যে কাতার এয়ারওয়েজের দুটি ফ্লাইটে বুধবার ইতালিতে যাওয়া ১৬৫ বাংলাদেশিকে ঢুকতে না দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে সব ধরনের ফ্লাইট ও যাত্রীদের ইতালিতে প্রবেশে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

ওয়ার্কার্স পার্টির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি অনুমোদনহীন রিজেন্ট হাসপাতালকে কোভিড-১৯ হাসপাতাল হিসেবে অনুমোদন, বিনা পয়সার পরীক্ষায় অর্থ আদায় এবং ছয় হাজারের বেশি ভুয়া সনদ দেওয়ার ঘটনা মানুষের হতাশাকে ‘আরও বাড়িয়ে তুলেছে’।

“আর এর ফলাফল বাংলাদেশের বিমান পরিবহনকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তেমনি দেশে রেমিটেন্স পাঠানো প্রবাসী শ্রমিকরা তাদের কর্মস্থলে ফিরতে পারছে না। তাদের ফিরতি বিমানে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”

দেশে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে ফি ধার্য করেছে, তা মানুষকে পরীক্ষা করাতে ‘অনুৎসাহিত করবে’ বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা।

ঢাকা মহানগরীকে ‘রেড’, ‘ইয়েলো’ ও ‘গ্রিন’ জোনে ভাগ করে সংক্রমিতদের বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত হলেও এক মাস ধরে দুটি এলাকা ছাড়া কোথাও এর বাস্তবায়ন না হওয়ায় পলিটব্যুরোর সভায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

সেখানে বলা হয়, “সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি না মানার জন্য দোষারোপ করা হলেও কার্যত কর্তৃপক্ষের মনোভাবই তাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি না মানতে উৎসাহিত করছে।”

ওয়ার্কাস পার্টি বলছে, মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে সচল রাখতে প্রধানমন্ত্রী প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করলেও করোনাভাইরাস আতঙ্কে জনজীবন অচল হয়ে পড়লে এর ‘কার্যকারিতা থাকবে না’।

নেতাদের উদ্ধৃত করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “কেবল স্বাস্থ্যক্ষেত্রেই অব্যবস্থাপনা, সমন্বয়হীনতা কাজ করছে না, এবার যে বাজেট দেওয়া হয়েছে তাতেও কোভিড-১৯ উপেক্ষা করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গীত গাওয়া হয়েছে।”

ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার সঞ্চালনায় পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, সুশান্ত দাস, মাহমুদুল হাসান মানিক, নুর আহমদ বকুল, কামরুল আহসান, আমিনুল ইসলাম গোলাপ, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হাক্কানী, আলী আহমেদ এনামুল হক এমরান এবং নজরুল হক নিলু ভার্চুয়াল সভায় যুক্ত ছিলেন।