সারা দেশে অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণের দাবি ২০ দলের

করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় অবিলম্বে সারা দেশে অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরির দাবি জানিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2020, 11:26 AM
Updated : 6 July 2020, 11:54 AM

জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে এই দাবি করা হয়েছে বলে সোমবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন জোটের সমন্বয়কারী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, “গতকাল ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। বৈঠকে দেশের প্রত্যেকটি শ্রম ঘন এবং ঘন বসতিপূর্ণ অঞ্চলে কোভিড-১৯ পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন এবং পরবর্তীতে সেগুলো সরকারি-বেসরকারি যৌথ মালিকানায় পরিচালনার জন্য ২০ দল প্রস্তাব করছে।

“সমাজের অর্থবান ব্যক্তিদের এ ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। ২০ দল মনে করে, এ ব্যাপারে সরকার আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ ও বন্ধু প্রতীম বিভিন্ন রাষ্ট্র সহযোগিতা করতে পারে।”

থাইল্যান্ডের প্রয়াত রাজা, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মতো বাংলাদেশের মন্ত্রী-এমপি-জনপ্রতিনিধি-জননেতা ও আমলারা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি হত বলে মনে করে ২০ দল।

একইসঙ্গে কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফি বাতিলের দাবিও জানিয়েছে ২০ দলীয় জোট।

এছাড়া গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত কিট কাজে না লাগানো এবং বিদেশ থেকে ‘নিম্নমানের’ কিট, মাস্ক ও পিপিই আনাসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী কেনায় ‘দুর্নীতি’ হয়েছে অভিযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ২০ দল।

গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির বিল

নজরুল ইসলাম খান বলেন, “২০ দলীয় জোটের সভায় সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠান যথা বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির বিল পরিশোধে বিপন্ন জনগণকে বাধ্য করার সরকারি উদ্যোগের তীব্র নিন্দা জানিয়ে আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এই সব বিল আদায় স্থগিত ঘোষণা এবং কর্মহীন-দরিদ্র মানুষের জন্য বিল মওকুফ করার জোর দাবি জানানো হয়।”

তিনি বলেন, ২০ দলীয় জোট বিদ্যমান পরিস্থিতিতে যথাসম্ভব ঘরে থাকা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা এবং ই-কমার্সের সুযোগের পাশাপাশি আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম বহুল ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের সেবার ওপর আরোপিত বর্ধিত কর প্রত্যাহারের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে।

সংসদে পাস হওয়া ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট প্রত্যাখ্যান করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি, দেশীয় প্রতিষ্ঠান সিপিডিসহ আন্তর্জাতিক কিংবা দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে যে বাজেট প্রণয়ন করা হল, তা দরিদ্র গণমানুষের কোনো কল্যাণ করবে না। ধনবান ও ক্ষমতাসীনদের স্বার্থ রক্ষা করবে বলে ২০ দল এই বাজেট প্রত্যাখ্যান করছে।”

ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসনে সহায়তা করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে ২০ দল।

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধের বিষয়ে ২০ দলের অবস্থান তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “পাটকল বন্ধ করার ফলে পাটচাষীরা যে অনিবার্য ক্ষতির সম্মুখীন হবেন সেই ক্ষতি পূরণে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে দাবি জানাচ্ছে ২০ দল।”

রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন ২০২০ নামে নতুন আইনের খসড়া প্রণয়নে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগকে ‘অসময়োপযোগী’, ‘অপ্রয়োজনীয়’ ও ‘উদ্দেশ্যমূলক’ হিসেবে অভিহিত করে এই উদ্যোগ বন্ধের দাবি জানিয়েছে ২০ দল।

২০ দলীয় জোটের ত্রাণ ততপরতা আরো সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত হয়ে্ছে বলে জানান নজরুল  ইসলাম খান। 

ভার্চুয়াল বৈঠকে জোটভুক্ত ২২টি দলের মধ্যে ১৯টি দলের শীর্ষ নেতারা ছিলেন।

এরা হলেন- বিএনপির নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জামায়াতে ইসলামীর মিয়া গোলাম পারোয়ার, খেলাফত মজলিশের আহমেদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যের এম এ রকীব, জমিয়তে উলামা ইসলামীর আল্লামা নুর হোসেনেই কাশেমী, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, ডেমেোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, পিপলস লীগের চেয়ারম্যান গরীব নেওয়াজ, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান আবু তাহের, এনডিপির আবু মো. তাহের, জাগপার খোন্দকার লুৎফুর রহমান, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম ও বাংলাদেশ ন্যাপের শাওন সাদেকী।