সোমবার সংসদ ভবন এলাকায় নিজের সরকারি বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “শুধু মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে কথা বলে, অথচ এত সংখ্যক লোক সুস্থ হচ্ছে, এটা তাদের চোখে পড়ছে না। তাদের (বিএনপি) দৃষ্টিভঙ্গি যে নেতিবাচক এটাই তার প্রমাণ।“
মহামারী ঠেকাতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশে এখন প্রায় ৭৩টি পরীক্ষাগারে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা হচ্ছে। পরীক্ষার সক্ষমতা দিন দিন বাড়ছে। জেলা পর্যায়ে কোভিড-১৯ হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়েও প্রস্তুতি রয়েছে।
বিএনপি নেতাদের তিনি প্রশ্ন করেন, “সরকার যদি অদক্ষ বা অযোগ্য হত, তবে এ সময়ে এমন ব্যবস্থা কী নিতে পারত?”
রোববার পর্যন্ত পাওয়া সরকারি তথ্য তুলে ধরে কাদের বলেন, ৭২ হাজার ৬২৫জন করোনাভাইরাসের রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। সুস্থতার হার ৪৪.৭২ শতাংশ, মৃত্যু হার ১.২৬ শতাংশ।
“মৃত্যুর এই হার যে কোনো দেশের তুলনায় কম। ইউরোপ আমেরিকা, এমন কি প্রতিবেশী দেশ ভারতে থেকেও এখানে অনেক কম। যদিও সরকার একটি মৃত্যুও প্রত্যাশা করে না।”
সরকার ‘সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে দক্ষতার সঙ্গে’ পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে দাবি করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, “করোনাভাইরাসের সঙ্কটে দায়িত্বশীল আচরণ না করে বিএনপি তাদের চিরাচরিত নালিশের রাজনীতি আঁকড়ে ধরেছে এবং আজগুবি সব তথ্য দিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করছে।”
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দুই হাজার ডাক্তার, পাঁচ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দুই হাজার মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে এখন করোনাভাইরাস পরীক্ষা হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোকেও কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।
“বিশ্বের অনেক দেশই নিজেদের সামর্থ্য দিয়ে করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে। বহু দেশ নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে তাদের স্বাস্থ্য কার্যক্রসম চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার সীমাবদ্ধতা নিয়েও করোনাভাইরাসের সঙ্কট মোকাবিলার সর্বাত্তবক প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে।
“শেখ হাসিনার সরকার দিন দিন সুরক্ষা সামগ্রী বাড়াচ্ছে, ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা ও ডাক্তার সংখ্যা বৃদ্ধি করছে। সরকারের সমন্বিত দক্ষতার কারণে এসব করা সম্ভব হচ্ছে। অথচ বিএনপির কার্যক্রম শুধু বিবৃতিরে মধ্যেই সীমাবদ্ধ।”
বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিএনপির মুখে দুর্নীতির কথা হাস্যকর। দুর্নীতিতে পর পর পাঁচ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের দল বিএনপি, লুটপাটের জন্যই জনগণের কাছে বার বার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। দুর্নীতি আর বিএনপি সমার্থক বলেই মানুষ মনে করে।
“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান এবং প্রতিনিয়ত সততায় দেশ-বিদেশে সমাদৃত ও প্রসংশিত। দুর্নীতিবাজ যেই হোক, দলীয় পরিচয়ের হলে তাকেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না, এটাই হল বাস্তবতা।”
‘বিভাজন ও বৈরিতার রাজনীতি’ পরিহার করে বিএনপি নেতাদের ‘মানুষ বাঁচানো’ ও করোনাভাইরাস প্রতিরোধের লড়াইয়ে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।