থোক বরাদ্দে নজরদারি চান জিএম কাদের

থোক বরাদ্দ পাওয়া খাতগুলোর কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করতে সমন্বয় কমিটি গঠনের দাবি তুলেছেন বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2020, 11:16 AM
Updated : 29 June 2020, 11:27 AM

সোমবার সংসদে বাজেরে ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি করেন।

তিনি বলেন, “সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়া থোক বরাদ্দ দিলে সাধারণত এডহক বেসিসে যখন যেখানে দরকার তখন সেখানে খরচ করার একটি প্রবণতা থাকে। কত দরকার, কী দরকার সেটা কে নির্ধারণ করবে? এগুলোর ব্যাপারে সঠিক নিয়ন্ত্রণ রাখা যায় না।

“এর প্রমাণ আজকের খবরের কাগজে দেখতে পাচ্ছি, ঢাকা মেডিকেল কলেজে স্বাস্থ্যকর্মীদের খরচ ২০ কোটির মত হয়েছে, খাবার খরচই হয়েছে প্রায় অর্ধেক। কতটুকু প্রয়োজন ছিল, কতটুকু অপচয় হয়েছে কতটুকু দুর্নীতি হয়েছে এখন পর্যন্ত জানি না। থোক বরাদ্দের ব্যাপারে যথার্থতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এ সংক্রান্ত একটি মনিটরিং টিম বা সমন্বয় কমিটি গঠন করলে তারা বিষয়গুলো মনিটর করতে পারবে।“

বাজেট প্রস্তাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার সমালোচনা করে জিএম কাদের বলেন, “কালো টাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ শুল্ক আয় বৃদ্ধির বড় ধরণের একটি পদক্ষেপ, আমরা মনে করছি ডেসপারেট মুভ। প্রায় সকল মহল থেকে প্রতিবাদ আসছে। বেশিরভাগ মানুষ মনে করে এটাতে শুধুমাত্র সুনাগরিকদের আইন ও নীতির প্রতি আনুগত্যকে নিরুৎসাহিত করা হবে না, এই সুযোগ দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে।

“প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। দুর্নীতি দমন কমিশন নামের সংস্থা রাখার সঠিক যৌক্তিকতা থাকবে কি না সেটার বিষয়ে সন্দেহ হয়। কারণ দুর্নীতি দমনের প্রধান সূত্র হলো অবৈধ সম্পদ। ব্যাখ্যাহীন সম্পদ বৈধ হলে শাস্তিযোগ্য দুর্নীতি আর থাকবে না। দুর্নীতি দমন কমিশন কী কাজ করবে?“

সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এই চেয়ারম্যান বলেন, “অতীতে বিভিন্ন সময় নানা শর্তে এই সুযোগ চালু ছিল, এখনও আছে। তবে এত ঢালাওভাবে, শুধু কিছু অর্থের বিনিময়ে সকল ধরণের অপকর্ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ বৈধতা দেওয়ার সুযোগ কখনও ছিল কি না সন্দেহ হয়। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে যেটা দেখা যায় এতে খুব বেশি লাভের সম্ভব হয় না।“   

প্রস্তাবিত বাজেটকে `বিশাল ঘাটতির‘ উল্লেখ করে বিরোধী দলীয় উপনেতা বলেন, “১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি। ঘাটতি কমাতে হলে ব্যয় কমাতে হবে। আয় বাড়াতে হবে। পরিচালন ব্যয় কমানো কঠিন কাজ। তবুও যতটা সম্ভব কৃচ্ছ্রতা সাধনের ব্যবস্থা করতে হবে। উন্নয়ন ব্যয়ে কিছুটা কাটছাঁট করে করোনা সঙ্কট মোকাবেলায় বাড়তি অর্থায়নের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।“

অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রাজস্ব আদায় প্রাক্বলনের চেয়ে অনেক হওয়ার ফলে ব্যাপক বাজেট ঘাটতি আশংকা তুলে ধরে তিনি বলেন, “অর্থমন্ত্রী বলেছেন, আগে ব্যয় করবো, পরে আয় করবো। এ কথায় আশ্বস্থ হওয়া খুবই কঠিন। আয় করতে ব্যর্থ হলে নতুন টাকা ছাপিয়ে খরচ মেটানো যায়। যার অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিবেন।

“একটি নির্দিষ্ট সময়ে এরকম বাড়তি ঋণ যদি নেওয়া হয়, তাহলে সাধারণত বিশেষজ্ঞদের মতে মুদ্রাস্ফীতি ঘটবে। অর্থনীতি নানা ধরণের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।“

বিরোধী দলীয় উপনেতা কাদের বৈদেশিক ঋণ ও সহায়তা পাওয়ার চেষ্টা ত্বরান্বিত করার প্রস্তাব করেন। একইসঙ্গে সব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কোভিড-১৯ চিকিৎসার ব্যবস্থা করারও দাবি জানান তিনি।