পাটকল বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে মতিঝিলে বিজেএমসি কার্যালয়ের সামনে রোববার দুপুরে অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ ঘোষণা দেন জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ।
জোটের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল্লাহ কাফি রতন, বাসদ (মার্কসবাদী) এর নেতা মানস নন্দী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য আকবর খান, গণসংহতি আন্দোলনের বাচ্চু ভূঁইয়া, কমিউনিস্ট লীগের নজরুল ইসলাম, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির নেতা আমেনা বেগম।
সমাবেশ পরিচালনা করেন বাসদ নেতা খালেকুজ্জামান লিপন।
সমাবেশে বাম নেতারা বলেন, করোনা সংক্রমণের এই দুর্যোগকালে ২৫টি রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধ করার গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যার ফলে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে প্রায় ৫৫-৬০ হাজার শ্রমিক কাজ হারাবে। তাদের পরিবার এবং ৪০ লাখ পাটচাষী ও তাদের পরিবার, পাট ব্যবসায়ী মিলে মোট প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ চরম বিপাকে পড়বে।
যখন পাটজাত দ্রব্যের চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে তখন দেশের রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধ করা ‘অযৌক্তিক ও অন্যায়’ বলে মনে করেন জোটের নেতারা।
“সারা পৃথিবীতে বছরে ৫০০ বিলিয়ন পিস শপিং ব্যাগ ব্যবহার হয়। যদি এর ২-৩ শতাংশের বাজারও বাংলাদেশ ধরতে পারে তাহলে দেশের পাটকল বন্ধ নয় নতুন পাটকল নির্মাণ ও শ্রমিক নিয়োগ করতে হবে,” বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
বাম নেতারা বলেন, বলা হচ্ছে পাটকল লোকসান দিচ্ছে। দেশবাসীর প্রশ্ন লোকসানের জন্য দায়ী কে? সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট, ভুল নীতি ও মাথাভারী-অদক্ষ প্রশাসন লোকসানের জন্য দায়ী, শ্রমিকরা নয়।
কারণ মৌসুমে জুলাই-অগাস্ট মাসে পাটের দাম যখন ১০০০/১২০০ টাকা থাকে তখন পাট না কিনে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে যখন পাটের দাম ২০০০/২২০০ টাকা হয় তখন কেনা এবং চাহিদার চেয়ে কম পাট ক্রয় করা হয়। বিদেশে বাজার খোঁজা, পণ্যের বহুমুখীকরণ এসবই মন্ত্রণালয় ও বিজেএমসিসহ প্রশাসনের কাজ। ফলে লোকসানের দায় কোনোভাবেই শ্রমিকরা নেবে না।
দেশের রাষ্ট্রীয় পাটকলগুলো পাকিস্তান আমলে ১৯৫১-৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত। ফলে দীর্ঘদিনের পুরনো যন্ত্রপাতির কারণে উৎপাদন অর্ধেকে নেমেছে বলে মন্তব্য করেন বাম নেতারা।