বিল, কর আদায় বন্ধ রাখার দাবি ফখরুলের

করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে জনগণের ওপর চাপ দিয়ে সরকার কর আদায় করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 June 2020, 01:02 PM
Updated : 25 June 2020, 01:02 PM

বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল আয়োজনে তিনি বলেন, “এখন এই দুঃসময়ে ইলেক্ট্রিক বিল, ইনকাম ট্যাক্স, অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স, মিউনিসিপ্যাল ট্যাক্স ও অন্যান্য যেসব ট্যাক্স আছে তা আপাতত বন্ধ করা উচিত। এজন্য যে, এখন নুষের পক্ষে এসব ট্যাক্স দেয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

“এই ট্যাক্সগুলো এখন আরো চাপ দিয়ে জনগণের কাছে থেকে আদায় করা হচ্ছে।”

বিদ্যুতের অতিরিক্ত বিল আদায়ের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “করোনার এই দুঃসময়েও ইলেক্ট্রিসিটির ভৌতিক বিল তৈরি করা হচ্ছে। প্রচুর বিল আসছে। যেখানে ৫ হাজার, ৬ হাজার টাকা বিল হয় সেখানে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকা বিল করা হচ্ছে।

“আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা অবিলম্বে এসব বিল আদায় আপাতত বন্ধ করা এবং ওইসব বিল সংশোধন করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।”

উত্তরার বাসা থেকে বিএনপির ‘জাতীয় করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন সেল’র ত্রাণ বিতরণ কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি জানান, গত ২০ মার্চ থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো সারাদেশে ৫৪ লাখ ১২ হাজার ৪১৬টি পরিবারকে খাদ্য সামগ্রীসহ আর্থিক সহযোগিতা করেছে। এতে দুই কোটি ১৬ লাখ ৪৯ হাজার ৬৬৪ জন মানুষ উপকৃত হয়েছে।

বিএনপির বাইরে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাব, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনসহ দলের নেতারাও কয়েক লাখ মাস্ক, স্যানিটাইজার, সাবান ও পিপিই বিতরণ করেছে।

ফখরুল বলেন, “অত্যন্ত ভরাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে চাই, আমাদের অনেক গুণীজন চলে গেছেন। আমরা জানি এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা শুধুমাত্র সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। যে ভয়ংকর রকমের বিপর্যয় আসছে তাকে মোকবিলা করার জন্য সরকারের যে আন্তরিকতার প্রয়োজন ছিল, সেই আন্তরিকতা তারা দেখাতে পারেনি। দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার কথা ছিল, সেই ভূমিকা তারা পালন করতে পারেনি, যে সমন্বয় থাকার কখা ছিলো সেই সমন্বয় তারা করতে পারেনি।

“কারণ একটাই যে, এই সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত কোনো সরকার নয়। এই ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করা একমাত্র একটি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের পক্ষে সম্ভব। আসুন আজকে আমরা জনগণের পাশে দাঁড়াই, এই মহাবিপর্যয়ে তাদের কল্যাণের জন্য আমরা কাজ করি। একই সঙ্গে যেন গণতান্ত্রিক কাঠামোর রাষ্ট্র ব্যবস্থা নির্মাণ করতে পারি তার জন্য আমরা সবাই কাজ করি।”

‘খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হচ্ছে না’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, “উনি যেখানে আছেন সেখানে করোনা যাতে সংক্রমিত না হয় সেজন্য সব রকমের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। উনি করোনা থেকে মুক্ত আছেন।

“‍উনার যে অসুখ ছিল সেই অসুখের খুব একটা উন্নতি হয়নি। কারণ এখানে কোনো রকম চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া যায়নি, যাচ্ছে না। হাসপাতালগুলোতে যাওয়া যায় না। বাইরে যাওয়ার ব্যাপারে তো শর্তই দিয়ে দিয়েছে যে, বাইরে যেতে পারবেন না। ওই অবস্থায় খুব বেশি উন্নতি হয়নি। উনার যেটা মূল অসুখ সেই অসুখের চিকিৎসা তো হচ্ছে না।”

দুর্নীতির দায়ে ২৫ মাস সাজা ভোগের পর ‘মানবিক বিবেচনায়’ সরকারের নির্বাহী আদেশে গত ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়া তার গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা‘য় ওঠেন। বাসায় ফেরার পর থেকে চিকিৎসকদের একটি দলের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে।