বগুড়া-যশোরে উপনির্বাচন আয়োজনের ‘পথ খুঁজছে’ ইসি

সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রক্ষায় করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনের উপনির্বাচন কবে শেষ করা যায় সে বিষয়ে আইনী পথ খুঁজছে নির্বাচন কমিশন।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 June 2020, 10:22 AM
Updated : 25 June 2020, 10:22 AM

সংবিধান অনুযায়ী, কোনো কারণে সংসদের কোনো সদস্যপদ শূন্য হওয়ার নব্বই দিনের মধ্যে উপনির্বাচনের আয়োজন করতে হয়। তবে কোনো দৈব-দূর্বিপাকের কারণে ওই সময়ের মধ্যে উপনির্বাচন করা সম্ভব না হলে পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে তা সম্পন্ন করতে হবে।

অর্থাৎ সবমিলিয়ে ১৮০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন আয়োজনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসন দুটি শূন্য ঘোষণার পর মধ্য জুলাইয়ে শেষ হবে সেই ১৮০ দিন। কিন্তু এখনও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কোনো উন্নতি দেখা যাচ্ছে না।

ফলে সংবিধানিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে থেকে কীভাবে ও কখন নির্বাচন করা হবে তা নিয়ে ইসিতে আলোচনা চলছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার বুধবার কমিশন সভা করেছেন। সভায় নির্বাচন পরিচালনা শাখার প্রযোজনীয় তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হলেও উপনির্বাচন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বৈঠক শেষে ইসির যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান জানান, ১৫ জুলাই বগুড়া-১ এবং ১৮ জুলাই যশোর-৬ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সংবিধান নির্ধারিত ১৮০ দিন শেষ হতে যাচ্ছে।

“আমরা কমিশন সভায় এ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেছি। সভায় কোনো সিদ্ধান্ত নেননি কমিশন। নির্বাচন করতে হবে অথবা পেছানোর জন্য উপযুক্ত ব্যাখ্যা থাকবে-সব কিছু বিবেচনা করে আইনের মধ্যে থেকেই কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। একটা পথ খুঁজে বের করবে ইসি।”

আরো পর্যালোচনা ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কমিশন আলোচনা করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যে সিদ্ধান্ত দেবে তা বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান তিনি।

সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের ৪ দফায় বলা হয়েছে-

 

সংসদ ভাঙ্গিয়া যাওয়া ব্যতীত অন্য কোনো কারণে সংসদের কোনো সদস্যপদ শূন্য হইলে পদটি শূন্য হইবার নব্বই দিনের মধ্যে উক্ত শূন্যপদ পূর্ণ করিবার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।

তবে শর্ত থাকে যে, যদি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মতে, কোন দৈব-দূর্বিপাকের কারণে এই দফার নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে উক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হয়, তাহা হইলে উক্ত মেয়াদের শেষ দিনের পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে উক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।

 

১৮ জানুয়ারি সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নানের মৃত্যুতে বগুড়া-১ এবং ২১ জানুয়ারি ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুতে যশোর-৬ আসন ফাঁকা হয়।

২৯ মার্চ এই দুটি উপনির্বাচন হওয়ারও কথা ছিল। করোনাভাইরাস সঙ্কটের কারণে ভোটের সপ্তাহখানেক আগে স্থগিত করা হয় নির্বাচন দুটি। একই সঙ্গে আটকে আছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনও।

এদিকে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেই এপ্রিল-মে মাসে শূন্য হওয়া পাবনা-৪ ও ঢাকা-৫ উপ নির্বাচন ৯০ দিনের মধ্যে সম্ভব হবে না উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ইসি সচিবালয়।

সাংসদ শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর মৃত্যুতে পাবনা-৪ ও হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যুতে ঢাকা-৫ আসন শূন্য হয়েছে।

আর মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে জুনের শুরুতে সিরাজগঞ্জ-১ আসনও শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।

আটকে থাকা উপনির্বাচন নিয়ে যথাসময়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছেন ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, মহামারীর মধ্যে আপাতত ভোট না করার কথা বলা হলেও অনির্দিষ্টকাল তা বন্ধ থাকতে পারবে না কিংবা সংসদীয় আসনও শূন্য রাখা যাবে না। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে যেমন সংসদের অধিবেশন বসতে হয়েছে তেমনি ভোট করার বিষয়টিও দেখতে হবে।