মহামারীর অনিশ্চয়তা জয় করে শেখ হাসিনার সফল বাজেট: কাদের

করোনাভাইরাস মহামারীর অনিশ্চয়তা জয় করে শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বে সরকার অত্যন্ত সফলভাবে বাজেট প্রণয়ন করেছে বলে দাবি করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 June 2020, 08:45 AM
Updated : 12 June 2020, 08:45 AM

আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে শুক্রবার সকালে দলীয় সভানেত্রীর ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে যুক্ত হয়ে সাংবাদিকদের কাছে তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “এই বাজেট প্রণয়নে দুটি অনিশ্চয়তা ছিল, যা জয় করা ছিল দুরূহ। অনিশ্চয়তা দুটি হচ্ছে- বাংলাদেশে করোনা মহামারি চূড়ান্ত পর্যায়ে কী হবে, সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কোনো স্বচ্ছ ধারণা না থাকা এবং করোনা-উত্তর বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতি কী হবে- তা সুনির্দিষ্ট করে এখনই বলতে না পারা।

“এই অনিশ্চয়তা জয় করে দুর্যোগপ্রবণ বাংলাদেশে দুর্যোগ মোকাবেলার একমাত্র ত্রাণকর্তা সাহসী নেতৃত্ব বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সফলভাবে বাজেট প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন করেছেন।”

বাজেট নিয়ে বিভিন্ন মহলের সমালোচনা ও প্রতিক্রিয়ার জবাবে সরকারের  সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপিসহ কতিপয় মহল বরাবরই বাজেট ‘বিচার-বিশ্লেষণ না করে আগে-ভাগে প্রস্তুত করা ও মনগড়া, পুরনো ও গতানুগতিক গল্পের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া’ ব্যক্ত করে থাকে।

“এবারও তারা সংকট জয়ের সুপরিকল্পিত কর্মোদ্যোগ- এই বাজেটের বিরুদ্ধে চিরায়ত ভঙ্গিতে মিথ্যাচার করছে।”

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জন্য পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার এই বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। এর মধ্যে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা তিনি রাজস্ব খাত থেকে যোগান দেওয়ার কঠিন পরিকল্পনা সাজিয়েছেন। তারপরও তার আয় ও ব্যয়ের হিসাবে সামগ্রিক ঘাটতি থাকছে প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৬ শতাংশের মত।

ঘাটতির এই পরিমাণ আগের যে কোনো বছরের তুলনায় বেশি। অভ্যন্তরীণ উৎস এবং বৈদেশিক ঋণ নিয়ে অর্থমন্ত্রীকে এই ঘাটতি পূরণ করতে হবে।

করোনাভাইরাসের সংকটকালীন ও সংকট পরবর্তী সম্ভাব্য অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার গতিপথ নির্ণয়ের লক্ষ্যেই এই বাজেট প্রণীত হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন,এবারের বাজেট ভিন্ন বাস্তবতায়, ভিন্ন প্রেক্ষাপটে প্রণীত। এ বাজেট করোনার বিদ্যমান সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দেওয়ার বাস্তবসম্মত প্রত্যাশার দলিল।

“গতানুগতিক ধারার সাথে ‘আউট অব বক্স’ চিন্তার সমন্বয় করে সংকট জয়ের নবউদ্যোম সৃষ্টিতে এই বাজেট পেশ করা হয়েছে।”

প্রস্তাবিত বাজেটকে ভারসাম্যপূর্ণ হিসেবে বর্ণনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এবারের বাজেটে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যখাতকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত বরাদ্দ, প্রণোদনা ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কৃষিকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে অধিক খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, সেচ ও বীজে প্রণোদনা, কৃষি পুনর্বাসনে জোর দেওয়া ও সারে ভর্তুকি দেওয়া অব্যাহত রাখাসহ বিভিন্ন কর্মদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

সড়কমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ সাধারণ ছুটি ও লকডাউনজনিত কারণে উপার্জনহীন হয়ে পড়া কর্মজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবে সামাজিক নিরাপত্তার খাতকে তৃতীয় অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

“সব দিক বিবেচনায় নিয়ে করোনার কবল থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ভারসাম্যপূর্ণ এই বাজেট জনবান্ধব ও জীবনঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক পরিকল্পনা, যার মাধ্যমে দেশের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য উৎসাহ পাবে।”

সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে দলের সভাপতিণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দীপু মণি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান সেখানে তার সঙ্গে ছিলেন।