লকডাউন না করে সাধারণ ছুটি ঘোষণা ছিল বড় ভুল: ফখরুল

করোনাভাইরাস মহামারীর বিস্তার রোধে যখন প্রায় বিশ্বজুড়ে দেশে দেশে ‘লকডাউন’ দেওয়া হয়েছে তখন বাংলাদেশ সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সংকটের গভীরতাকে উপেক্ষা করেছে বলে মনে করছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2020, 12:11 PM
Updated : 27 May 2020, 12:11 PM

বুধবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এমন কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকার লকডাউন না করে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। তখন তো ছুটির আমেজ আসবে। তখন কেউ কক্সবাজার যায়, কেউ সিলেট যায়,  কেউ বাড়ি যায়, কেউ মামার বাড়ি যায়, কেউ নানার বাড়ি যায়।

“ওই জায়গায়টাতে সরকার সবচেয়ে বড় ভুলটা করেছে। তারা কোনো লকডাউন না করে সাধারণ ছুটি দিয়ে এই সমস্যাটা সৃষ্টি করেছে।”

দেশজুড়ে লকডাউন না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে সাবেক প্রতিমন্ত্রী বলেন, “লকডাউন কথাটা প্রত্যেকটি দেশ ব্যবহার করেছে, প্রত্যেকটি সরকার ব্যবহার করেছে। আমাদের সরকার কেন লকডাউন ঘোষণা করলো না সেটা তারা বলতে পারবে।

“আমি যেটা মনে করি তাদের অভিজ্ঞতার অভাব, তাদের উদাসীনতা…। তারা (সরকার) কি এটা বুঝাতে চেয়েছে যে, ‘আমাদের এখানে সমস্যা নেই। আমরা সাধারণ ছুটি দিয়েছি।”

তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকাকে বিচ্ছিন্নভাবে লকডাউনের রাখা হলেও এভাবে সংক্রমণ প্রতিরোধ বাস্তসম্মত নয়।

“আমরা মনে করি, এখানে প্রাথমিকভাবে লকডাউন রেখে যদি সঠিকভাবে প্রয়োগ করা যেত তাহলে সংক্রমণটা অনেক কম হতো। এখন এমন একটা গ্রাম নেই যেখানে আক্রান্ত হয়নি। পরীক্ষা তো নেই, পরীক্ষা হলেই ধরা পড়তো।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা যদি প্রথমেই লকডাউন দিতাম, এটাকে পালন করতাম তাহলে এই সংক্রমণ ছড়াতো না। লকডাউন তুলে নেওয়ার কাজটি যেসব রাষ্ট্র করছে, তারা কিছু তিন মাস লকডাউন করে তারপরে তা শিথিল করার চেষ্টা করছে।

“এখন পর্যন্ত আমরা যেটা লক্ষ্য করেছি আমাদের দেশে, এই ঘনবসতির দেশে এখানে শক্তভাবে এটাকে বাস্তবায়িত না করলে এটাকে মোকাবিলা করা খুব কঠিন।”

তথ্যমন্ত্রীর প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহসচিব বলেন, “আমরা যে কথাই বলি না কেন, আপনি লক্ষ্য করেছেন যে, তথ্যমন্ত্রী সবসময় যে কথাটা একেবারেই তোঁতা পাখির মতো বলে যাচ্ছেন, আপনারা মিডিয়াতে দেখাচ্ছেন-আমরা জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে শুধু সমালোচনা করছি।

“বিরোধী দলের কাজই তো হচ্ছে সরকারের কর্মকাণ্ডের ভুলগুলোকে সুধরে দেওয়া। নেবে না নেবে সেটা সরকারের বিষয়। আমরা সেই ত্রুটিগুলোকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছি।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও তার প্রতিষ্ঠান প্রথম দিকে করোনা কিট উদ্ভাবন করলেন। এখন পর্যন্ত তারা অনুমোদন পায়নি। উনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আমি তার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

“সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি যে, অবিলম্বে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের করোনা কিটের পরীক্ষা শেষ করে তা ব্যবহার করতে দেওয়া হোক। তাতে জনগণ এই রোগ থেকে মুক্তি পাবে।”

বিএনপি মহাসচিব উত্তরার নিজের বাসায় বেলা সোয়া ১২টায় এই ভার্চুয়াল ভিডিও কনফারেন্সের করেন। এতে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা অংশ নেন।