এখন বিষোদ্গারের সময় নয়: হাছান মাহমুদ

বিএনপি নেতাদের ‘বিষোদ্গারের রাজনীতি’ থেকে বেরিয়ে এসে ‘ঐক্যবদ্ধভাবে’ করোনাভাইরাস মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2020, 12:06 PM
Updated : 26 May 2020, 12:06 PM

মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) রজতজয়ন্তীর সভায় তার এ আহ্বান আসে।

হাছান মাহমুদ বলেন, “দুঃখের বিষয়, ঈদের দিনেও বিএনপি সমালোচনা আর বিদ্বেষের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব ঈদের নামাজ পড়ে জিয়াউর রহমানের মাজারে দোয়া করে সরকারের প্রতি বিষোদ্গার করেছেন।

“আমি মির্জা ফখরুল সাহেবসহ যারা এ ধরনের সমালোচনা করছেন, তাদের বলব- এখন বিষোদ্গারের সময় নয়, আসুন আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করি।”

সোমবার ঈদের সকালে জিয়ার কবর জিয়ারতের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ মানুষদের সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্য দিয়ে বেসামরিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ার আলামত দেখছেন তিনি।

এর জবাব দিতে গিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, “এই বৈশ্বিক মহামারির কারণে শুধু বাংলাদেশে নয়, উন্নত দেশগুলোও আজ নাস্তানাবুদ পরিস্থিতির শিকার। সেখানে মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না।”

তিনি তথ্য দেন, বেলজিয়ামে করোনাভাইরাসে মৃত্যু হার ১৫ শতাংশ, ব্রিটেনে ১৪ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৬ শতাংশ, ভারতে ৩.২ শতাংশ, পাকিস্তানে ২ শতাংশের বেশি, সেখানে বাংলাদেশে এ হার ১.৪ শতাংশ।

“স্বাস্থ্যব্যবস্থা যদি খুবই খারাপ হত, তাহলে মৃত্যুর হার অন্যান্য দেশের মত আরও বেশিই হত।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “এ মহামারীর জন্য বিশ্বের কোনো দেশই প্রস্তুত ছিল না। সব দেশে মহামারী মোকাবিলায় সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা চলছে। অন্য দেশে বিরোধী দল পরামর্শ দিচ্ছে, কিন্তু অন্ধের মতো সমালোচনা করছে না।”

ডিআরইউর রজতজয়ন্তী

করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি বন্ধ থাকায় ঢাকার প্রতিবেদকদের এই সংগঠনের ২৫ বছর পূর্তিতে বড় কোনো আয়োজন রাখা হয়নি। কেবল সীমিত পরিসরে এই আলোচনা সভারই আয়োজন করা হয়।

ডিআরইউর সকল সদস্যকে রজতজয়ন্তীর অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি মহামারীর মধ্যে সাংবাদিকদের জন্য পরীক্ষা বুথ স্থাপন, সুরক্ষাসামগ্রী সংগ্রহ ও বিতরণের মত পদক্ষেপ নেওয়ায় এ সংগঠনের প্রশংসা করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, “আমি সবসময় সাংবাদিকদের সাথে ছিলাম, আছি এবং থাকব। মানানীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গত ১১ বছরে দেশের গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মাধ্যম তিনগুণ হবার পাশাপাশি কয়েক হাজার অনলাইন সংবাদ পোর্টাল হয়েছে, যেগুলোর নিবন্ধনের কাজ দ্রুত চলছে।

অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলোর নিবন্ধন দেওয়ার কাজ ‘শিগগিরই’ শুরু হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “যেসব অনলাইন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে না, হীন উদ্দেশ্যে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ায় এবং নানা অনৈতিক কাজে লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

“আর যেসব অনলাইন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে, গণমাধ্যম জগতে সত্যিকার ভূমিকা রাখছে, তারা রেজিস্ট্রেশন পাবে।”

সমাজ ও রাষ্ট্রে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের ভূমিকা ‘অনেক বড়’ মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, “এ কারণে ভুয়া সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে সাংবাদিকদেরই ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। বিভিন্ন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বহু সময় আমাদের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়।”

ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরীর সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে সংগঠনের সহসভাপতি নজরুল কবীর, ডিআরইউর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা ফিরোজ, সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, রাজু আহমেদ ও মুরসালিন নোমানী আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন।