মঙ্গলবার নিজের সরকারি বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি অধিকাংশ মানুষের মাঝে ধৈর্য ও শৃঙ্খলার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। অনেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরে অবস্থান করলেও, অনেকেই এসব কানে তুলছে না, স্বাভাবিক সময়ের মত ঘোরাফেরা করছেন, হাটবাজারের ভিড়ে অংশ নিচ্ছেন, স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলছেন না। করছেন না দায়িত্বশীল আচরণ।
“এই উদাসীনতা নিজের ও আশপাশের সকলের ভয়ানক বিপদ ডেকে আনছে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ উদ্যোগের অবনতি ঘটাচ্ছে । এতে উদ্বেগের পাশাপাশি বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু।”
তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “দয়া করে আসুন সবাই সচেতন হই, কারণ প্রতিকার সমাধান নয়, এই রোগ থেকে বাঁচতে ও সুরক্ষা পেতে প্রতিরোধের বিকল্প নেই। আপনার সামান্যতম শৈথিল্য নিজ পরিবার এবং পার্শ্ববর্তীদের ভয়াবহ অবস্থার দিকে ঠেলে দিতে পারে। ঈদের প্রাক্কালে গ্রাম ও শহরের মানুষের অবাধ বিচরণ করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।”
করোনাভাইরাসের সংকটেও বিএনপি নেতিবাচকতার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “করোনা সংকটের শুরু থেকে আজ অবধি শেখ হাসিনা সরকারের উদ্যোগ, গৃহীত ও বাস্তবায়িত সিদ্ধান্ত যখন দেশ-বিদেশে প্রশংসিত, তখন মির্জা ফখরুল সাহেবরা পুরানো নেতিবাচকতার বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে।
“সিয়াম সাধনার পর পবিত্র ঈদের দিনে মানুষের পাশে না থেকে, মানুষকে সাহস না যুগিয়ে মির্জা ফখরুল সাহেবরা সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার ও সমালোচনার তীর ছুড়ছেন, যা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত । নিজেরা জনগণের পাশে দাঁড়াবেন না, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজ-খবরও নেবেন না, অথচ মিডিয়ায় সরকারের সমালোচনা করবেন, এটা কি বিএনপির রাজনীতি?”
বিএনপির কোনো কর্মসূচিতে সরকার বাধা দেয়নি বলে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “পবিত্র ঈদের দিনেও জনগণ তাদের মুখের বিষ থেকে রেহাই পায়নি। সরকার একদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ ও আক্রান্তদের চিকিৎসা দিচ্ছে, অপর দিকে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সুরক্ষায় পূর্ণ মনোনিবেশ করছে। এমতাবস্থায় বিএনপিকে কোনো কর্মসূচিতে বাধা প্রদান- মিথ্যাবাদী রাখাল বালকের গল্পের মত।”
দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানো আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য জানিয়ে তিনি বলেন, “করোনাভাইরাস সংকট এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগই জনগণের পাশে থাকে।
“ইতোমধ্যে বিশ্বের ২১৫টি দেশ এবং অঞ্চল সমূহের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থানের অবনতি হয়েছে, বাংলাদেশের অবস্থান বর্তমানে ২৩তম। এই সংক্রমণ থেকে ছোট বড় ধনী-গরিব কেউই রেহাই পাচ্ছে না। প্রাণঘাতি এই ভাইরাস থেকে রেহাই পেতে প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার তথা সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। সামনে কঠিন সময়ে আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলি।
“সামনে কিছু দিন বাংলাদেশে পরিস্থিতি আরও কঠিন হবে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ধৈর্যহারা না হয়ে সাবধানতা অবলম্বনের জন্য আবারও আহ্বান জানাচ্ছি। যারা ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ করছেন তাদেরও মনোবল না হারিয়ে সাহসিকতার সাথে লড়াইয়ের অনুরোধ জানাচ্ছি। আপনারা মনে সাহস রাখুন, ধৈর্য ধরুন। সংকট ও দুর্যোগে সাহসী নেতৃত্ব দেশরত্ন শেখ হাসিনা এবং তার সরকার আপনাদের পাশে রয়েছে। জনগণের সাহসিকতা নিয়ে আমরা অনিশ্চয়তার আঁধার কাটিয়ে উঠব ইনশাল্লাহ।”