সরকারের ‘একলা চলো’ নীতি জনগণকে ফেলছে ঝুঁকিতে: ফখরুল

সরকারের ‘একলা চলো’ নীতির কারণে জনগণ করোনাভাইরাসের মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2020, 09:32 AM
Updated : 25 April 2020, 11:54 AM

শনিবার দুপুরে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার সম্মিলিত উদ্যোগ না নিয়ে মহামারি মোকাবেলায় পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচায় দিয়েছে।

“সেই একলা চলো নীতি, তাদের সেই একদলীয় শাসন ব্যবস্থার যে নীতি, সেই নীতির কারণেই আজকে জনগণ প্রচণ্ড রকমের ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে, ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

“দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে যে, সত্য কথাটি জানতে আমরা জানতে পারছি না, ইনফরম্যাশনগুলো আমরা পাচ্ছি না। যে কথাগুলো সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, তার সঙ্গে বাস্তবতার কতটুকু মিল আছে তা সম্পর্কে সকল জনগণের মধ্যে ইতিমধ্যে প্রশ্ন এসে গেছে।”

বিএনপি মহসচিব বলেন,  করোনাভাইরাস প্রমাণ করেছে তাদের শাসনব্যবস্থা কতটা ভঙ্গুর। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে গেছে।

“সাধারণ রোগীরা যাদের ক্যান্সার হয়েছে, যাদের হয়ত লাংস ক্যান্সার বা টিবি আছে বা যাদের অ্যাপেন্ডিসাইটিস রয়েছে তারা কোনো চিকিৎসা পাচ্ছে না- এটা বাস্তবতা।”

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জনসচেতনতা সৃষ্টিসহ দলের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা করোনা সংক্রমণ শুরুর আগেই জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য লিফলেট বিলি করেছি, মাস্ক বিতরণ করেছি। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ড্যাব চিকিৎসক-স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য পিপিই দিয়েছে, হটলাইন চালু করেছে রোগীকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য।…

“ইতিমধ্যে আমরা ৭ লাখ পরিবারের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছি, সীমিত শক্তির মধ্য দিয়ে। প্রতিদিনই আমাদের এই সংখ্যা  বাড়ছে এবং এটা আরো বাড়বে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”

তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “তথ্যমন্ত্রী সাহেব আমাদেরকে গালিগালাজ করেছেন এবং বলেছেন যে, আমরা না কি শুধুমাত্র কথাই বলছি, আমরা কোনো কাজ করছি না।

“১২/১৩ বছর তাদের নির্যাতনের পরেও আমরা যে কাজটুকু করেছ, আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি যে, আমরা তাদের দল থেকে অনেক বেশি কাজ করেছি। আমরা ৭ লাখ পরিবারের কাছে ত্রাণ পৌঁছিয়ে দিয়েছি আমাদের সীমিত শক্তির মধ্য দিয়ে। প্রতিদিনই আমাদের এই সংখ্যা বাড়ছে।”

সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন রাজনৈতিক বির্তকের সময় নয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার সময় নয়।

“অহংকার এবং আত্মম্ভরিতা বাদ দিয়ে আসুন, সমগ্র জাতিকে আমরা ঐক্যবদ্ধ করি, ঐক্যবদ্ধ করে সমগ্র জাতিকে করোনাভাইসের যে আগ্রাসন সেই আগ্রাসন মোকাবিলা করার জন্য আমরা চেষ্টা করি। সেই উদ্যোগ আপনারা গ্রহণ করুন।”

‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন সময়ে গুম-খুন হওয়া এবং নির্যাতিত নেতা-কর্মীর পরিবারের সদস্যদেরকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেওয়া ঈদ উপহার প্রদানের’ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।

ছাত্র দলের নিহত তিন পরিবার যথাক্রমে নুর আলম, নুরজ্জামান, ও মাহবুবুর রহমান বাপ্পীর পরিবারের হাতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ঈদ উপহার তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব।

সারাদেশে গুম-খুন-নির্যাতনে নিহত সহাস্রাধিক নেতা-কর্মীর পরিবারের কাছে এই উপহার পৌঁছিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

দলের নির্বাহী সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলালের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা রিয়াজ উদ্দিন নসু, ইশরাক হোসেন, আমিনুল ইসলাম, আতিকুর রহমান রুমন, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের ইয়াসীন আলী, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন, নাজমুল হাসান, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।