আ. লীগ তালিকা করলে ত্রাণ পাবে শুধু দলীয় লোক: রিজভী

করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে সহায়তার জন্য দুস্থ মানুষের তালিকা তৈরির কাজটি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা পেলে দলীয় লোকজন ছাড়া কেউ সরকারি ত্রাণ পাবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2020, 08:36 AM
Updated : 18 April 2020, 10:18 AM

দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শনিবার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সরকারের ওই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান।

তিনি বলেন, “সারাদেশে ত্রাণ কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা দিতে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ত্রাণ কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগ ত্রাণের তালিকা করে স্থানীয় প্রশাসনকে দেবে। তার মানে এই তালিকায় কেবল আওয়ামী লীগ করা লোকজনেরই ঠাঁই হবে, তাদের লোকজনই শুধু ত্রাণ পাবে।

“যে সরষের মধ্যে ভূত সেখানে তাদেরকেই যদি দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে কাদের পক্ষ নিয়েছে এই সরকার তা স্পষ্ট বোঝা যায়। আমরা এই বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং আশংকা বোধ করছি যে, ত্রাণ কার্যক্রমে দলীয় কমিটির কারণে চাল চুরি আরো বৃদ্ধি পাবে। দলীয় তালিকা করে দলের লোকজন খাবে, আর অন্যরা না খেয়ে মরবে। এটা হলে দুর্ভিক্ষ আরো তরান্বিত হবে বলে আমরা মনে করি। অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে দিয়ে ত্রাণের তালিকা করার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।”

রিজভী বলেন, লকডাউন কিংবা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে দেশের কোটি কোটি মানুষ খাবার সংকটে পড়েছে। এই অবস্থায় গরিব ও অসহায় মানুষের জন্য ত্রাণের চাল বরাদ্দ, ওএমএস কর্মসূচি কিংবা কম দামে টিসিবির মাধ্যমে তেলের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির উদ্যোগ অবশ্যই ইতিবাচক।

“কিন্তু কোনো গণবিরোধী সরকার ও প্রশাসনের হাতে পড়লে যে কোনো শুভ উদ্যোগও কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে ওঠে।”

করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ‘ব্যর্থ’ হয়েছে মন্তব্য তিনি বলেন, সরকার ভাইরাস প্রতিরোধের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সময় পেলেও সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ‘কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি’। আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য আইসিইউতে ভেন্টিলেটর মেশিন ও সেন্টাল অক্সিজেন লাইনের সুবিধাসহ পৃথক হাসপাতাল স্থাপন করতে পারেনি।

“এখন চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ না করায় বাড়ছে রোগীদের দুর্ভোগ ও মৃত্যুহার। সারাদেশে করোনার কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না, চারদিকে মানুষের কেবলেই আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অদূরদর্শিতা ও হেয়ালিপনার কারণে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা।”

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “করোনাভাইরাস ইস্যু নিয়ে জনগণের সঙ্গে লুকোচুরি করার মানে হচ্ছে মানুষের জীবন নিয়ে জুয়া খেলা। জনগণের জীবন নিয়ে জুয়া খেলবেন না। আমরা দেখলাম, ১৬ এপ্রিল সারা দেশকে সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করেছে। এটি বুঝতে সরকারের কেন এত দেরি হলো তা বোধগম্য নয়।”

বিএনপির নেতা-কর্মীরা প্রতিনিয়ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, “কই সরকারের মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদেরকে তো জনগণের পাশে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে না। কই স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে তো কোনো হাসপাতাল পরিদর্শনে যেতে দেখিনি।

“উল্টো দেখা যাচ্ছে, সরকারি ত্রাণ চুরির মহোৎসব। ক্ষমতাসীনদের বাড়িতে চালের খনির পর এখন তেলের খনির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে।”