বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, “এই খুনির ফাঁসির রায় অবশ্যই কার্যকর হবে। তবে তার আগে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বঙ্গবন্ধু ও জেলখানায় জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে কারা ছিল সেই তথ্য জানা যাবে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে বঙ্গবন্ধুর বাকি খুনিরা কোথায় পালিয়ে আছে সেটাও।”
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার আড়াই মাসের মাথায় জেলখানায় হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে।
জাতীয় চার নেতার একজন শহীদ এম মনসুর আলীর ছেলে মোহাম্মদ নাসিম সেই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের তথ্য বের করতে মাজেদকে জিজ্ঞাসাবাদের এই দাবি তুললেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “এই খুনিকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে বলে আমি মনে করি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করব, এর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।
“কারণ এই খুনি বলতে পারবে সেদিন জেলখানায় হত্যার নির্দেশ কে দিয়েছিল, কারা দিয়েছিল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের মধ্য দিয়ে অনেক কিছু উন্মোচন হবে, যারা বঙ্গবন্ধু ও জেলখানায় চার নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল।”
নভেল করোনাভাইরাসের এই বিপর্যয়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর খুনি পলাতক আবদুল মাজেদের গ্রেপ্তার দেশবাসীর জন্য একটি সুসংবাদ বয়ে এনেছে বলে মন্তব্য করেন নাসিম।
“আমরা আশ্বস্ত হয়েছি যে, দীর্ঘ কয়েক যুগ পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুনিকে গ্রেপ্তার করেছে। এজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। আমি মনে করি, এই খুনি শুধু জাতির জনককে হত্যা করেননি এই খুনি জেলখানায় ঢুকে জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল,” বলেন তিনি।
যে সেনা সদস্যরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল, মাজেদ তাদের একজন। অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার শেষে ২০০৯ সালের নভেম্বরে সর্বোচ্চ আদালত থেকে ১১ জনের ফাঁসির রায় আসে। তাদের মধ্যে পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি কার্যকর করা হলেও মাজেদসহ ছয়জন পলাতক থাকেন।
দুই দশকেরও বেশি সময় ভারতের পালিয়ে থাকার পর গত মঙ্গলবার সকালে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা মাজেদ। তার দণ্ড কার্যকর করতে বুধবার ঢাকার জজ আদালত মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে।
মাজেদের প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি নাকচ করায় এখন যে কোনো দিন ফাঁসি কার্যকর করা হতে পারে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন।