খালেদা জিয়া কোয়ারেন্টিনেই থাকবেন: ফখরুল

নভেল করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে প্যারোলে মুক্ত হওয়ার পর ১৪ দিনের মেয়াদ শেষ করলেও খালেদা জিয়া হোম কোয়ারেন্টিনেই থাকবেন বলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2020, 08:58 AM
Updated : 9 April 2020, 10:59 AM

বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “করোনাভাইরাসের সংক্রমণে এখন সারা বিশ্বের যে অবস্থা এবং সারাদেশ এখন লকডাউনের মতো হয়ে গেছে-এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তো ১০০ শতাংশ তাকে (খালেদা জিয়া) কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে, সেখানে উনি সেইফ আছেন।

“এখন উনি সম্পূর্ণ হোম কোয়ারেন্টিন পরিবেশেই থাকবেন। আমরা আশা করি, এর মধ্যে (কোয়ারেন্টিন অবস্থায়) উনি ভালো থাকবেন। যখন এই (করোনাভাইরাস সংক্রমণ) পরিস্থিতির সমস্যাটা কমবে তখনই পরবর্তী অবস্থার কথা আমরা চিন্তা করবো।”

দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, “ম্যাডাম যথেষ্ট অসুস্থ। এখনো ইনফ্যাক্ট ইম্প্রুভমেন্ট উনার অসুখের খুব বেশি হয় নাই। একটা মূল বিষয় ছিলো যে, তাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া- আমাদের দাবিটা ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা বলেছেন যে, দেশের বাইরে যাওয়া যাবে না।

“দেশের অভ্যন্তরে চিকিৎসা সেবার যে অবস্থাটা তাতে করে তো সব ডাক্তারাও সার্ভিস দিতে পারছেন না। যতটুকু পারছে তার যে ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা আছেন তারা তাকে দেখেছেন, দেখছেন এবং একটা চিকিৎসা দিয়েছেন। আমরা আশা করি যে, এর মধ্যে উনি ভালো থাকবেন।”

‘ডা. জোবাইদার তত্ত্বাবধানেই চিকিৎসা’

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের সদস্য বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, “ম্যাডামের চিকিৎসার সব কিছু লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান তত্ত্বাবধান করছেন।

“আজকে উনার ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ হচ্ছে। এখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরিবারের সদস্যরা তার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারবেন। ”

গত ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে ৬ মাস সাজা স্থগিত রেখে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয় সরকার। সেদিন বিকাল ৫ টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের থেকে মুক্তি পেয়ে অসুস্থ খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় আসেন। 

‘ফিরোজা’র দোতলাতে খালেদা জিয়া কোয়ারেন্টিনে আছেন; সঙ্গে নার্সসহ কয়েকজন আছে। এই  ১৪ দিন কেউ নিচে নামেননি বলে জানান তার ব্যক্তিগত এক চিকিৎসক।

৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া রিউমাটয়েড আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখ ও দাঁতের নানা রোগে ভোগছেন।

অধ্যাপক জাহিদ বলেন, “দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময়ে ধরে নির্জন কারাবাস এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসা না হওয়া কারণে ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। হাত-পায়ে আর্থারাইটিজের প্রচণ্ড ব্যথার কারণে উনি ভীষণ কষ্ট পাচ্ছেন। এই ব্যথা উপশমের জন্য ফিজিওথেরাপি দেওয়া হচ্ছে।

‘‘উনার (খালেদা জিয়া) ডায়েবেটিক এখনো যথাযর্থ নিয়ন্ত্রণে আসেনি। উনাকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তুলতে দীর্ঘ এবং উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হবে।”

‘ফিরোজা’য় গেইটে পাহারারত নিরাপত্তা কর্মীরা জানান, ম্যাডামের বাসায় প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করা হয়েছে। শুধুমাত্র চিকিৎসকের টিমের সদস্যবৃন্দ ও  কয়েকজন নিকট আত্মীয়-স্বজন আসছেন।