কোভিড-১৯: প্রয়োজনে উন্নয়ন বরাদ্দ কাটছাঁটের দাবি বাম জোটের

প্রয়োজনে উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ কমিয়ে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সৃষ্ট সঙ্কট মোকাবেলায় অর্থ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে গণতান্ত্রিক বাম জোট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 April 2020, 02:59 PM
Updated : 4 April 2020, 02:59 PM

শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের এক অনলাইন সভা শেষে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে একটি স্মারকলিপিও পাঠানো হয়েছে।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রধান সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ স্বাক্ষরিত ওই স্মারকলিপিতে বলা হয়, শুধু আইন করে মানুষকে ঘরে আটকে রাখা যাবে না।

“এই অনিশ্চয়তা কাটাতে করোনাভাইরাসকে যেমন মোকাবেলা করতে হবে, তেমনি ক্ষুধা-দারিদ্র্যের কবল থেকেও দেশবাসীকে রক্ষা করার জন্য বাজেট পুনঃবণ্টন করে অপ্রয়োজনীয় খাত থেকে এবং প্রয়োজনে উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ কাটছাঁট করে এই সংকট মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।”

নভেল করোনাভাইরাসের মহামারীতে গত তিন মাসে সারা বিশ্বে আক্রান্ত হয়েছে সাড়ে ১১ লাখ মানুষ, ৬০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন ৭০ জন, তাদের মধ্যে ৮ জনের মৃত্যু ঘটেছে।

বাম জোট বলছে, “বাংলাদেশের জনঘনত্ব বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বলে কোনোভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে তা রোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে। এ ধরনের মহামারী গোটা বিশ্ব এবং বাংলাদেশ ইতোপূর্বে কখনও প্রত্যক্ষ করেনি।

“ফলে এই মহাসঙ্কট সরকারের একার পক্ষে মোকাবেলা সম্ভব নয়, দরকার সকলের অংশগ্রহণে সমন্বিত উদ্যোগ। এ জন্য সরকার তথা প্রধানমন্ত্রীকেই উদ্যোগ নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক করা জরুরি।”

সরকারের তরফ থেকে করোনাভাইরাস মোকাবেলার সমন্বিত কোনো উদ্যোগ ‘নেওয়া হয়নি’ অভিযোগ করে স্মারকলিপিতে বলা হয়, “করোনাভাইরাসের সংক্রমণকে ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করে সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সর্বদলীয় বৈঠক করে জাতীয় কমিটি গঠন করুন।

“চিকিৎসক, গবেষক, বিজ্ঞানী, ভাইরোলজিস্টদের সমন্বয়ে টেকনিকাল কমিটি গঠন করে সকলের মতামতের ভিত্তিতে সমন্বিত উদ্যোগে এ মহামারী প্রতিরোধে কর্মপন্থা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।”

সরকারের তরফ থেকে রপ্তানি শিল্পের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা, হতদরিদ্রদের জন্য ১০ টাকা কেজি দামে চাল বিক্রি ও জেলা-উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা প্রদানের কথা বলা হয়েছে।

তবে বাম জোটের অভিযোগ, এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

“বিভিন্ন স্থানে দেখা যাচ্ছে ভোটার তালিকা ও দলীয় পরিচয় দেখে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, যা এ দুর্যোগমুহূর্তে অনাকাঙ্ক্ষিত।”

স্মারকলিপিতে বলা হয়, অন্তত প্রত্যেক জেলায় করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব স্থাপন করে ‘র‌্যানডম’ পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কমিউনিটি সেন্টারগুলোকে দুর্যোগকালীন আশ্রয়কেন্দ্র বানিয়ে তাতে ছিন্নমূল মানুষের আশ্রয় দিতে হবে।

দেশের বিভিন্ন তারকা মানের হোটেল এবং জেলা সদরের ভালো মানের হোটেলগুলোকে ৬ মাসের জন্য অধিগ্রহণ করে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে বলেও মত দিয়েছেন বাম জোট নেতারা।

এছাড়া বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও কোভিড-১৯পরীক্ষা সম্প্রসারণের দাবি জানিয়ে বাম জোট বলেছে, বেসরকারি যে হাসপাতালগুলোতে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব আছে, সেগুলো অন্তত ৬ মাসের জন্য সরকারের নিয়ন্ত্রণে এনে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।