বুধবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে গুলশানে খালেদা জিয়ার বাড়ি ফিরোজায় গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
ফখরুল বলেন, “আমরা শুধু ম্যাডামের সাথে দেখা করতে এসেছি। তিনি খুব অসুস্থ। চিকিৎসকরা তাকে দেখছেন। তার চিকিৎসার ব্যাপারটা নিশ্চিত করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিছুদিন অন্তত ম্যাডামকে যেন কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়, অর্থাৎ অন্য কেউ যেন দেখা-সাক্ষাত না করে, সেসব বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি।”
বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, তাদের চেয়ারপারসনের সঙ্গে রাজনৈতিক কোনো বিষয়ে তাদের আলোচনা হয়নি।
“স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন, শুকরিয়া আদায় করেছেন যে, তিনি ফিরে এসছেন বাসায়।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনারা দেখেছেন যে, মাননীয় চেয়ারপারসন অত্যন্ত অসুস্থ। তারপরেও তিনি সকল নেতা-কর্মী ও দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং সকলকে ভালো থাকতে বলেছেন। তিনি কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য বলেছেন এবং ভয়াবহ যে মহামারী হচ্ছে, সেজন্য সবাই যেন আমরা সচেতনভাবে চলি এবং নিজেকে বাঁচিয়ে চলি- সে কথা বলেছেন।”
খালেদা জিয়া কতদিন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, “সেটা চিকিৎসকরা ঠিক করবেন।”
দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে গত দুই বছর ধরে কারাগারে বন্দি ছিলেন খালেদা জিয়া। চিকিৎসার জন্য গত বছর ১ এপ্রিল থেকে তাকে রাখা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।
আদালতে জামিন না হওয়ায় খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছিল, মানবিক কারণে নির্বাহী আদেশে যেন তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
তাতে সাড়া দিয়ে সরকারের তরফ থেকে মঙ্গলবার জানানো হয়, বিএনপি চেয়ারপারসনের দণ্ডের কার্যকরিতা স্থগিত করে ছয় মাসের জন্য তাকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সময়ে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
এরপর বুধবার বিকালে কারা কর্তৃপক্ষ খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিলে তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল থেকে বাসায় নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা সেখানে গিয়ে খালেদার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন। অধ্যাপক এফএফ রহমান, অধ্যাপক রজিবুল ইসলাম, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস ও অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন ছিলেন এই চিকিৎসক দলে।
পরে সন্ধ্যা ৭টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করতে যান দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান এ সময় মির্জা ফখরুলের সঙ্গে ছিলেন।