দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে দুই বছর ধরে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে আকস্মিকভাবেই মঙ্গলবার মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায় সরকার।
এই খবর শুনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ প্রায় অর্ধশত নেতা-কর্মী জড়ো হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে, যেখানে চিকিৎসার জন্য এক বছরের বেশি সময় ধরে ধরে রয়েছেন তাদের নেত্রী। অর্ধ শতাধিক সাংবাদিকও উপস্থিত হন সেখানে।
নভেল করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ এড়াতে জনসমাগম এড়ানোর নির্দেশনা রয়েছে। এজন্য দেশ যখন ‘লকডাউন’র দিকে যাচ্ছে, তখন হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ভিড় দেখে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ ভিড় না করার অনুরোধ জানিয়ে মাইকিং শুরু করে। সবাইকে মূল ফটকের বাইরে যেতে অনুরোধ করা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে রিজভীও নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনার নিজেদের স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দিন।
“নিজের জীবন বাঁচানোর দিক দেখতে হবে। এখানে অহেতুক ভিড় করবেন না। নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা আইসোলেশনে থাকুন, ভিড় করবেন না।”
খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে সরকারের সিদ্ধান্তের পর বিএসএমএমইউ প্রাঙ্গণে প্রথমে দেখা যায় ওই বিএমএর সাবেক সভাপতি ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনকে।
সাড়ে ৪দিকে হাসপাতালে আসেন।
এরপর সেখানে উপস্থিত হন রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, হাবিবউন নবী খান সোহেল, সাবেক সাংসদ আখতারুজ্জামান, মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ।
খালেদা জিয়ার মুক্তির পর নেতাকর্মীদের ভিড় সামলানোর বিষয়ে রিজভী বলেন, “পৃথিবীব্যাপী করোনাভাইরাস যে মহামারী আকারে বিস্তার লাভ করেছে, সেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ আমাদের চিকিৎসকরা যে সকল বিধি-বিধানের কথা বলছেন, সেসব বিধি-বিধান মেনেই উনাকে রাখা হবে। কারণ তিনি এমনিতেই অসুস্থ।”
সরকারের সিদ্ধান্তে সাধুবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, “গণমাধ্যমে তার মুক্তির যতটুকু সংবাদ পেয়েছি, সেখানে আমরা অনেকটা আশ্বস্ত হয়েছি। শ্বাসরুদ্ধকর যে পরিস্থিতি, সেই পরিস্থিতিকে উত্তরণের একটা ধাপ তৈরি হয়েছে।”
মুক্তির পর খালেদা জিয়া তার গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় উঠতে পারেন বলে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। সেখানে দলের নেতা-কর্মীদের যাতায়াত আগেও খুবই সীমিত ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফিরোজায় চেয়ারপারসেনর কক্ষ গোছানো, পরিচ্ছন্নতা- সব কিছু ঠিক করা হচ্ছে।
“তবে উনার সঙ্গে আলোচনা করে তার গন্তব্য ঠিক করা হবে। তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে যাবেন আগে, নাকি ফিরোজায় যাবেন, তা চেয়ারপারসন বিবেচনা করবেন। তবে সার্বিক প্রস্তুতি থাকবে আমাদের।”