নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলা নিয়ে করণীয় বিষয়ে সুপারিশ তুলে ধরতে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
মান্না বলেন, “বৈশ্বিক মহামারীর এ সময়টাতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি যে কমিউনিটি লেভেলে পৌঁছে গেছে তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। … সমস্ত শক্তি দিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করা উচিত।”
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, “জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে দেশের সামর্থ্যবান ও ধনী মানুষদের উচিত হবে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানো। আমরা আশা করি, তারা তাদের ব্যক্তিগত অথবা সামষ্টিক উদ্যোগে চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে কোনো রকম অবদান রাখার চেষ্টা করবেন।
“একই সাথে দেশের অর্থনীতি স্থবির হয়ে যাবার কারণে যতখানি হয়েছে, যতখানি হবে, যে প্রান্তিক মানুষরা তাদের উপার্জন হারিয়ে রীতিমতো খাদ্যের অভাবেও পড়বেন সেই বিপদ মোকাবিলায় ধনী মানুষদের উচিত হবে তাদের পাশে দাঁড়ানো।”
জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে টাস্কফোর্স গঠনসহ নাগরিক ঐক্যের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি ২০ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
সুপারিশগুলোর মধ্যে আছে- সরকারের সমন্বয়হীনতা দূর করতে সব সেক্টরের মানুষদের নিয়ে দ্রুত ট্রাস্কফোর্স গঠন, বিদেশফেরত মানুষদের হোম কোয়ারেন্টিনে বাধ্য করা এবং প্রয়োজনে ভারতের মতো প্রত্যেক বিদেশফেরতের হাতে অমোচনীয় কালির সিল দেওয়া, করোনাভাইরাসের মহামারীর ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করে তোলার কর্মসূচি গ্রহণ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনসহ আসন্ন উপ-নির্বাচনসমূহ স্থগিত করা, ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক সমাবেশ বন্ধ রাখার নির্দেশ শক্তভাবে প্রয়োগ করা, আদালতগুলো বন্ধ করা, বস্তিবাসীদের করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতন করতে আলাদা টিম গঠন করা এবং সন্দেহভাজনদের পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে খুব দ্রুত স্বতন্ত্র হাসপাতাল তৈরি করে তাদের পরীক্ষা করা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিট দ্রুত বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন এবং তা মানুষের জন্য পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা, সারাদেশে ডাক্তার ও স্বাস্থ্য সেবা কর্মীর জন্য পার্সোনাল প্রটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট অতি দ্রুত সরবারহ করা, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ করোনাভাইরাস সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার সকল ওষুধের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিটগুলো প্রস্তুত রাখা, সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ বেড এবং ভেন্টিলেটর বৃদ্ধি, করোনাভাইরাস সংশ্লিষ্ট সেবাদান করার জন্য প্রয়োজনীয় সব স্বাস্থ্য উপকরণ ও যন্ত্রপাতির উপর থেকে সব রকমের শুল্ক তুলে নেওয়া, কোনো এলাকা লকডাউন করতে হলে সেখানকার প্রান্তিক মানুষের খাবারের দায়িত্ব সরকারকে গ্রহণ করা, গার্মেন্টস শিল্প রক্ষায় সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা, দেশের অর্থনীতি স্থবির হয়ে যাওয়ার কারণে রিকশাচালক, দিনমজুর, শ্রমিক, বাসার গৃহকর্মী, পরিবহন কর্মী ও ফেরিওয়ালাসহ অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত মানুষদের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করা।
গণ-পরিবহন ও টাকাকে জীবাণুমুক্ত করার বিষয়েও সরকারকে নজর দেওয়ার সুপারিশও করা হয়।
নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় নেতা শহীদুল্লাহ কায়সার ও মমিনুল ইসলাম, আতিকুর রহমান, ড. জাহিদ-উর রহমান এবং সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলী উপস্থিত ছিলেন।