করোনাভাইরাস নিয়ে সরকার ‘লিপ সার্ভিসে’: রিজভী

বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানো নভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের কাজ মুখেই সীমাবদ্ধ বলে দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2020, 01:17 PM
Updated : 16 March 2020, 02:25 PM

তিনি বলেছেন, “করোনাভাইরাসের মতো একটি পৃথিবীব্যাপী মহামারী- এটা প্রতিরোধে আমরা সরকারের সেরকম উদ্যোগ দেখছি না। সরকারের গৃহীত ব্যবস্থা একেবারেই অপ্রতুল। তারা লিপ সার্ভিস দিচ্ছে, সোশ্যাল সার্ভিস নয়।”

করোনাভাইরাস নিয়ে জনসচেতনতায় রোববার সকালে দলীয় লিফলেট বিতরণকালে সাংবাদিকদের একথা বলেন রিজভী।

করোনাভাইরাস নিয়ে সরকার সব তথ্য দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

“এখনও যে কী অবস্থায় আছে, সেটা সরকার কোনোভাবে জানাচ্ছে না, নানা কথা আমরা শুনতে পারছি। আমরা এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা লিফলেট বিতরনের মাধ্যমে আমরা মানুষকে যতটুকু পারছি সচেতন করছি।”

সকালের এই কর্মসূচিতে রিজভী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন যে, আগে সংক্রমন হোক, তারপরে স্কুল-কলেজ বন্ধের কথা চিন্তা করব। গণবিরোধী সরকারের মন্ত্রীরা ছাড়া এই কথা কেউ বলতে পারে না। ওই ভানুর সেই কৌতুকের মতো- আগে ঝুলাইলা যাবার কও, তারপরে আমি তো আছি।”

তবে দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা আসে।

 বিদেশ থেকে আসা বাংলাদেশিদের কোয়ারেন্টিন নিয়ে রিজভী বলেন, “আমাদের প্রবাসীরা যারা বিদেশ থেকে আসছেন তাদেরকে আলাদাভাবে রাখার যে ব্যবস্থা, সেটা ভয়ংকর বিপর্যস্তমূলক অবস্থা। হজ ক্যাম্পের মধ্যে স্যানিটেশন নাই, মেটশিপ ব্যবস্থা নাই।”

স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, “এই ভয়ংকর স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির এই পরিবেশের মধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের উদ্যোগ সেভাবে নেই।

“সব কিছু মিলিয়ে আমরা যেটা দেখতে পাই যে, এই সরকারের যে গণবিরোধী নীতি বা চরিত্র সেটারই প্রতিফলন।”

সকাল ১১টার দিকে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে লিফলেট বিলি শুরু করেন রিজভী। ফুটপাতের দোকানি থেকে শুরু করে রিকশাচালক, যাত্রী ও পথচারীদের হাতে লিফলেট তুলে দেন তিনি।

এ সময়ে তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, কৃষক দলের সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিন, কেন্দ্রীয় নেতা নাসির হায়দার, তরিকুল ইসলাম মোল্লা, ফেরদৌস পাটোয়ারী, মো. আলিম হোসেন, মেহেদী হাসান পলাশ, জাহাঙ্গীর আলম।

সাংবাদিকের নিপীড়নের নিন্দা

রিজভী বলেন, “গোটা জাতির আজ আতঙ্কিত। কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে যেভাবে রাতে বাসা থেকে তুলে নিয়ে এসে ভয়াবহ আঘাত করা হল, আহত করা হল, এটা সরকারের গণবিরোধী চরিত্র। তারা করোনোভাইরাস কতটুকু প্রতিরোধ করবে?

“আজকে দেশের একজন প্রথিতযশা সাংবাদিক এবং সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর নামে মামলা দিয়ে দিচ্ছে। তাদের নজর হচ্ছে- বিরোধী মতকে দমন কর, বিরোধীদলকে দমন কর।”

“আমরা মতিউর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে গ্রেপ্তার করে নির্যাতনের ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি,” বলেন তিনি।

খালেদার চিকিৎসা নিয়ে অপ্রপচার’

রিজভী বলেন, “গণবিরোধী সরকার বিরোধীদের পক্ষের সবচাইতে উচ্চকণ্ঠ দেশনেত্রী বেগম খালেদাকে মিথ্যা মামলায় বন্দি করে রেখেছে। আমরা আজকেও শুনেছি যে, তার বাম দাঁতের ব্যথা এখন ডান দিকে চলে গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও আদালত কী বলেছে? উনি কোনো স্বাস্থ্য সেবা নিচ্ছে না। এটা একেবারেই সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। উনি ইন্সুলিন নিচ্ছেন, সব কিছু নিচ্ছেন।

“তার যে আর্থারাইটিস, এই যে আর্থারাইটিসের যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া-এটা ডাক্তাররাই বলছেন যে, এটা পিজি হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) এটা সম্ভব নয়। কিন্তু তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে তিনি না কি চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন না। এগুলো হচ্ছে- গণবিরোধী সরকারের বক্তব্য।”