করোনাভাইরাস: এরশাদের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে কাটছাঁট

নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মদিনের অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করছে জাতীয় পার্টি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2020, 12:09 PM
Updated : 12 March 2020, 12:10 PM

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্যদের নিয়ে এক ‘জরুরি সভা’ থেকে এ সিদ্ধান্ত আসে।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ সাংবাদিকদের বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে সারাদেশে ব্যাপক সতকর্তা জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে আমরা দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মদিনও পালন করব। তবে খুব জনাসমাগম করা যাবে না।”

ইতোমধ্যে দলের প্রতিটি জেলা কমিটিকে ‘কেক না কেটে’ জন্মদিন পালন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

”আমরা দোয়া মাহফিল ও গরীবদের মধ্যে খাবার বিতরণের মাধ্যমেই এই দিনটি পালন করব। পাশাপাশি সংক্ষিপ্ত পরিসরে আলোচনা সভার আয়োজন থাকবে।”

গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও তিন দশক ধরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্ব নিয়ে থাকা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গতবছর ১৪ জুলাই মারা যান। তার মৃত্যুর পর এটাই হবে তার প্রধম জন্মদিনের উদযাপন।

জাতীয় পার্টির ওয়েবসাইট ও বাংলাপিডিয়ায় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জাপার প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্ম ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহারের দিনহাটায়।তবে এরশাদের জীবদ্দশায় তার জন্মদিন পালন করতেন ২০ মার্চ। 

রাঙ্গাঁ বলেন, আগামী ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে দেশব্যাপী দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করবে জাতীয় পার্টি।

দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সভায় এদিন  ‘গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত’ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, দলের পদপদবী নিয়ে নানা জটিলতা নিরসনে নেতারা ‘ঐকমত্যে এসেছেন’।

“আমরা চাইছি, দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের কমিটিতে কেউ একের অধিক পদে থাকতে পারবে না। দলে দেখা গিয়েছে যে একজন নেতা একসঙ্গে তিন-চারটি কমিটিতে পদে রয়েছেন। চেয়ারম্যান মহোদয় নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, একের বেশি পদে কেউ থাকবেন না। জেলা পর্যায়ের নেতারা দুটি পদে থাকতে পারবেন। পরে তা পর্যায়ক্রমে একটিতে নিয়ে আসা হবে।”

পদ-পদবী পুনর্নির্ধারণের পর কোনো নেতা দলের কোনো কমিটি থেকে বাদ পড়ে গেলে তাকে নিয়ে আসা হবে জি এম কাদেরের ‘স্পেশাল কমিটিতে’।

দলের গঠনতন্ত্রের ৩২ ধারা অনুযায়ী দলের চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদের কমিটি গঠন ও তাতে সদস্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন বলে জানান রাঙ্গাঁ।

যেসব জেলায় জাতীয় পার্টির কমিটি নিয়ে এখনও নানা সমস্যা রয়ে গেছে, তা সমাধানে দলের আটজন কো চেয়ারম্যান ছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান, সাংগঠনিক সম্পাদকদের গুরুদায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বৃহস্পতিবারের জরুরি সভা থেকে।

যেসব জেলা কমিটির মেয়াদ তিন বছরেরও বেশি হয়ে গেছে, সেগুলো নবায়ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সভায়।

চট্টগ্রাম, রংপুর, বাগেরহাট, বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলায় উপ নির্বাচন ও স্থানীয় সংসদ নির্বাচনগুলোতে জাতীয় পার্টির কার্যক্রম বেগবান করতে একটি টিম গঠন করা হবে বলে জানান রাঙ্গাঁ।

“এই টিমটি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবে।  আসন্ন প্রতিটি নির্বাচন যেন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়, তাতে জাতীয় পার্টি ভূমিকা রাখবে।”

রাঙ্গাঁ এদিন সাংবাদিকদের বলেন, “দ্বাদশ জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টি অল্প কিছু আসন ছেড়ে দিয়ে নির্বাচন করবে।”

নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের কার্যক্রমে ‘আপাতত সন্তুষ্ট’ থাকলেও কোনো চিকিৎসা কার্যক্রমে কোনো গাফিলতি দেখলে সরকারকে তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন জাপা মহাসচিব।