মোদীকে প্রতিহতের ঘোষণা হেফাজত ও সমমনাদের

ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ঘিরে দিল্লিতে ‘মুসলমানদের ওপর সহিংসতার’ প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলামসহ সমমনা কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Feb 2020, 03:25 PM
Updated : 28 Feb 2020, 03:25 PM

শুক্রবার জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে ‘সমমনা ইসলামী দলসমূহের’ ব্যানারে এই বিক্ষোভ থেকে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জানানো আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করারও দাবি জানানো হয়।

সমাবেশ শেষে বায়তুল মোকাররম থেকে শুরু হয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল পল্টন মোড় হয়ে বিজয়নগর দিয়ে নয়াপল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

এ সময় এই সড়কের দুইপাশে প্রায় আধা ঘণ্টা সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখে পুলিশ। মিছিলের কারণে আগে থেকেই নয়াপল্টন মোড়ে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের আগে রোববার দিল্লিতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) সমর্থক ও বিরোধীদের পাল্টাপাল্টি মিছিল থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে তা দাঙ্গার রূপ নেয়।

টানা চার দিন ধরে দাঙ্গায় এ পর্যন্ত ৪২ জন নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।

বায়তুল মোকাররমের সমাবেশে থেকে এই দাঙ্গায় কেবল মুসলানদের ওপর হামলা, নির্যাতন ও হত্যা করার অভিযোগ আনা হয়। আর এর পেছনে দেশটির ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত রয়েছে অভিযোগ তোলা হয়।

সমাবেশে ঢাকা মহানগর হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা নূর হোসেন কাশেমী বলেন, “ভারত সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দিল্লিতে মুসলমানদের ওপর হামলা চলছে। তাদের হত্যা করে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মুসলমান হিসেবে আমরা এসব মেনে নিতে পারছি না।”

নরেন্দ্র মোদীকে বাংলাদেশের মাটিতে ‘পা রাখতে দেওয়া হবে না’ বলেও হুঁশিয়ার করেন এই হেফাজত নেতা।

খেলাফত মজলিশের মহাসচিব আহমেদ আবদুল কাদের বলেন, “ভারতের এমন ঘৃণ্যতম কাজে আমরা ধিক্কার ও ঘৃণা জানানোর ভাষা খুঁজে পাই না। বাংলাদেশের এক মন্ত্রী বলছেন- এসব নাকি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। মুসলমানদের ধরে হত্যা করা হচ্ছে, আর কোনো মন্ত্রী যদি এমন কথা বলেন, তাহলে তিনি ভারতের দালাল। ভারতের কোনো দালালকেও বাংলাদেশে বরদাস্ত করা হবে না।”

জমিয়তে ওলামা ইলামী বাংলাদেশের নেতা আব্দুর রব ইঊসূফি বলেন, “বঙ্গবন্ধু কখনও সাম্প্রদায়িক ছিলেন না, তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সাম্প্রদায়িক নন। সাম্প্রদায়িকতা আমরাও সমর্থন করি না।

“সাম্প্রদায়িক মোদী মুসলমানদের হত্যা করে বাংলাদেশে আসতে পারবে না। যদি তিনি বাংলাদেশে আসার প্রস্তুতি নেন তাহলে তৌহিদী জনতা কাফনের কাপড় দিয়ে মাথায় পাগড়ি পরে শাহজালালর বিমানবন্দরে অবস্থান নেবে।”

ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আব্দুল করিম বলেন, “মোদ ঢাকা এলে মজসিদের শহর ঢাকা অপবিত্র হয়ে যাবে। জীবন দিয়ে হলেও তাকে প্রতিহত করা হবে।”

হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, “কোনো খুনির বাংলাদেশের মাটিতে জায়গা হতে পারে না। যদি মোদী আসতে চায় তাহলে সেদিন বিমানবন্দরে অভিমুখে আমাদের যাত্রা শুরু হবে।”

বাংলাদেশে ভারতের সকল পণ্য বর্জনের দাবি জানান তিনি।