ভারতকে আমন্ত্রণ না জানালে কৃতঘ্নতা হবে: কাদের

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতকে আমন্ত্রণ না জানালে কৃতঘ্নতার পরিচয় দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2020, 12:33 PM
Updated : 16 Dec 2021, 07:24 PM

দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণের খবরের পর সমালোচনার প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার এক প্রশ্নের জবাবে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “এখানে মুজিববর্ষে ভারতকে আমন্ত্রণ করার মূল কারণ হচ্ছে, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে ও মুক্তিযুদ্ধে তারাই হচ্ছে সর্বোচ্চ সাহায্যদানকারী দেশ। ভারত আমাদের শরণার্থীদের সাহায্য করেছে। ভারতই আমাদের অস্ত্র, ট্রেনিং- এসবের ব্যবস্থা করেছে।

“সর্বোপরি মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ কমান্ডে মুক্তিযুদ্ধের শেষ অংশে আমরা বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলাম। এখানে আমাদের রক্তের সঙ্গে ভারতেরও রক্ত মিশে আছে। কাজেই ভারতকে এই মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানো এটাতো কৃতঘ্নতার পরিচয়। পাশাপাশি অসম্পূর্ণ একটা বিষয় হিসেবে থেকে যায়।”

জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী সাড়ম্বরে উদযাপন করবে বাংলাদেশ; বছরব্যাপী এই অনুষ্ঠানমালা শুরু হবে আগামী ১৭ মার্চ।

মুজিববর্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আমন্ত্রণের যে খবর ছিল, দৃশ্যত তারই আনুষ্ঠানিক ঘোষণার ইঙ্গিত এলো কাদেরের কথায়।

ওই অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আনা হলে তাকে প্রতিহত করার হুমকি দিয়েছেন ডাকসুর ভিপি নূরুল হক নূর। মোদীকে আমন্ত্রণ করা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমেও ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।

এবিষয়ে সরকারের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে বাংলাদেশে ‘বিরূপ প্রতিক্রিয়া’ হলে তা নিয়ে সে দেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যায়। কিন্তু অভ্যন্তরীণ সংঘাত, সংঘর্ষ, রাজনৈতিক বিরোধের কারণে আমন্ত্রণ না জানানোর কারণ নেই।

“এরকম এটা অনুষ্ঠানে সবচেয়ে বড় মিত্র দেশ ভারত এবং স্বাধীনতার যুদ্ধে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সাহায্যকারী দেশকে সে দেশের প্রতিনিধিত্বকে আমরা বাদ দেব এটাতো চিন্তাও করা যায় না।”

দিল্লির দাঙ্গা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশেও কোনো বিষয়ে সরকারের সঙ্গে বিরোধী দলের ভিন্নমত থেকে রাজনৈতিক উত্তাপ, সহিংসতা হয়, সেটার অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।

“যেটা আজকে দিল্লিতে ঘটছে সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে আমরা কেন অযথা নাক গলাতে যাব। তাদের ইন্টারনাল সমস্যার সমাধান তারাই খুঁজে নেবে।”

বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সি শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ সুগম করতে ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা হয়।

মুসলিমদের বাদ দেওয়ায় নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) নামে নতুন এই আইনকে সাম্প্রদায়িক এবং সংবিধানবিরোধী আখ্যা দিয়ে ভারতজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। এর বিরুদ্ধে কেরালা, পাঞ্জাব, রাজস্থান ও পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় সিএএবিরোধী প্রস্তাব হয়েছে।

দিল্লিতে দুই মাস ধরে সিএএবিরোধী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের সিএএ সমর্থকরা মাঠে নামলে চার দিন আগে দিল্লির উত্তরপূর্বাঞ্চলে দাঙ্গা শুরু হয়। এই সংঘাতে অন্তত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং দুই শতাধিক আহত হয়েছে।