মুজিববর্ষের আয়োজনে বিএনপিও দাওয়াত পাবে: কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সব রাজনৈতিক দলকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Feb 2020, 04:41 PM
Updated : 20 Feb 2020, 04:42 PM

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “বিএনপিকেও আমন্ত্রণ জানানো হবে। অংশগ্রহণ করবে কি না সেটি তাদের ব্যাপার। তবে স্বাধীনতাবিরোধী কোনো দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না।”

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন সরকারের সেতুমন্ত্রী কাদের।

তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের ইতিহাসের মহাবীর, মহানায়ক। বঙ্গবন্ধু কোনো পার্টির নয়, গোটা বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের দল-মত নির্বিশেষে সকল শ্রেণির মানুষের নেতা। তাকে নিয়ে আমরা দলীয়করণ করতে চাই না। তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে।

“কাজেই দল-মত নির্বিশেষে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে, স্বাধীনতার আদর্শে বিশ্বাস করে, সকলের জন্যই মুজিববর্ষ উদযাপন উন্মুক্ত। এখানে কোনো সংকীর্ণতার সুযোগ নেই।”

মুজিববর্ষের ক্ষণ গগণার আয়োজনে বিএনপির অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি তুলে ধরে কাদের বলেন, “বিএনপিকে আমরা আমাদের জাতীয় সম্মেলনেও দাওয়া দিয়েছি। আপনারা জানেন, মুজিব বর্ষের ক্ষণ গণনা, সেখানেও কিন্তু বিএনপি আমন্ত্রিত ছিল।

“কেন তারা উপস্থিত থাকেনি... মুজিব বর্ষে তারা অংশগ্রহণ করবে কি না সেটা তাদের ব্যাপার। আমরা তাদের আমন্ত্রণ করব। তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোনো সাম্প্রদায়িক শক্তিকে সম্পৃক্ত করতে চাই না। এটা আমরা খুব খোলাখুলি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই।”

এর আগে জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের জন্য জাতীয় কমিটির সঙ্গে কীভাবে আওয়ামী লীগের দলীয় অনুষ্ঠানগুলোর সমন্বয় করা যায়- তা নিয়ে বৈঠক হয়েছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

বছর জুড়ে সুশৃঙ্খল ও স্বতস্ফূর্তভাবে ‘মুজিববর্ষ’ আয়োজন করার ইচ্ছা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এখানে সমন্বয়টা গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় কমিটি প্রোগ্রাম এবং আমাদের দলীয় এজেন্ডাগুলো কীভাবে সমন্বয় করব- তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে উদ্বোধনী দিনে যে কর্মসূচি রয়েছে দেশি-বিদেশি ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে, এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি যেটা প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত হবে।”

মুজিববর্ষে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাফল্য, অর্জনকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরার পরিকল্পনা জানিয়ে কাদের বলেন, “দেশে-বিদেশে বাংলাদেশ ব্র্যান্ডকে আমরা ফোকাসে আনব। সেই বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা পর্যন্ত সংগ্রাম, আন্দোলন, ইতিহাস, সাফল্য, উন্নয়ন, অর্জন সবকিছুই এখানে আসবে। সবকিছুই ফোকাসে আসবে। সারা দুনিয়ার সামনে বাংলাদেশ ব্রান্ডকে তুলে ধরার এটা একটা মুখ্য সময়, মাহেন্দ্রক্ষণ। এই সময়টিকে আমরা কাজে লাগাতে চাই।”

এছাড়া আওয়ামী লীগ দল হিসেবে কীভাবে মুজিববর্ষ উদযাপন করবে সে বিষয়েও শিগগিরই ‘রোডম্যাপ’ চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান সাধারণ সম্পাদক।

উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, সদস্য সচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, তথ্য কমিশনার আবদুল মালেক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ  নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন শফিক, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, কেন্দ্রীয় সদস্য ইকবাল হোসেন অপু।