বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদার কারাবাসের দুই বছর পূর্তিতে শনিবার এক সমাবেশ থেকে তাকে মুক্ত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নেত্রীর মুক্তি দাবিতে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন তিনি।
এর প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সেটি রাজনৈতিক মামলা নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা এই মামলা এখন আদালতে বিচারাধীন। সুতরাং আন্দোলন করা মানে আদালতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা।”
শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকার বিভিন্ন আসনের সাংসদ ও নবনির্বাচিত দুই মেয়রের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন কাদের।
তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হেরে যাওয়ার কারণে বিএনপি এখন সরকারের ‘বিষোদগার করছে’।
“এখন তারা আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে। তাদের আন্দোলনের এই হুমকিতে আমরা অভ্যস্ত। এই হুমকি আমরা বারবার শুনে আসছি। বেগম জিয়াকে তারা আন্দোলন করে মুক্ত করবেন- এটাই আজকে মোটামুটি অনেকে উচ্চারণ করেছে।”
এর মধ্য দিয়ে বিএনপি আদালতের বিরুদ্ধে আন্দোলন নামছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “যাদের বিবেক আছে তাদের কাছে প্রশ্ন, আওয়ামী লীগ সরকার খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করেনি, এই সরকার মামলাও দেয়নি। এটা রাজনৈতিক মামলাও নয়। এটা দুর্নীতির মামলা মামলা, যা সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার করেছে।
“রাজনৈতিক কারণে সরকার যদি বেগম জিয়াকে গ্রেপ্তার করত তাহলে রাজনৈতিক কারণে তাকে মুক্তি দেওয়ার প্রশ্ন আসতে পারত। কিন্তু যেহেতু এটা রাজনৈতিক কারণে গ্রেপ্তার করা হয়নি কাজেই সরকারের রাজনীতি বিবেচনার কোনো সুযোগ এখানে নেই।”
সড়ক পরিবহন মন্ত্রী কাদের বলেন, “যদি মনে করেন তারা আন্দোলন করে সরকারকে বাধ্য করবে তাহলে সম্ভব না। সরকারকে বাধ্য করতে পারবে না, পারবে আদালতকে। তবে এটা কতোটা সমীচীন, কতোটা যুক্তিযুক্ত? বিচার ব্যবস্থার দিক থেকে আদালতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, আন্দোলন ঘোষণা তারা কেন করছে, এটা কোন গণতন্ত্র, ড. কামাল হোসেন সাহেবকে আমি জিজ্ঞেস করতে চাই।”
বিএনপিকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক রীতি-নীতি মেনে আন্দোলন হলে তা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা হবে।
“কিন্তু আন্দোলনের নামে যদি সহিংসতা হয়, যেটা তারা বারবার করে আসছে, যেমন আদালতকেও তারা কলুষিত করেছে। সে রকম কোনো আন্দোলন যদি তারা করতে চান সেটা কিন্তু মোকাবেলা করা হবে এবং দাতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন।