ঢাকা সিটি ভোট: দিনের প্রথম ভাগে ভোটার কম

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সকালের ভাগে ভোটার উপস্থিতি কম দেখা গেছে, অনেক কেন্দ্রে খুঁজে পাওয়া যায়নি বিএনপি প্রার্থীর এজেন্টদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকজ্যেষ্ঠ ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2020, 06:25 AM
Updated : 1 Feb 2020, 06:27 AM

শনিবার সকাল ৮টায় ভোট শুরুর পর নগরীর বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু কেন্দ্রে ঘুরে পাওয়া গেছে এমন চিত্র। ইভিএমে ভোট দেওয়া নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভোটাররা।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের এজি চার্চ কেন্দ্রের চার নাম্বার কক্ষে ৩৩৩ জন ভোটারের মধ্যে সকাল ১০ টা ২৬ মিনিট পর্যন্ত ভোট দেন মাত্র ১২ জন।

সোয়া ১১টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাও বলেছেন, ভোটার উপস্থিতি ‘এখন পর্যন্ত’ ভালো না। সময় গড়ালে উপস্থিতি বাড়বে বলে আশা তার।

ঢাকা উত্তরে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের কেন্দ্র উত্তরার নবাব হাবিবুল্লাহ মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি কক্ষে প্রথম ঘণ্টায় ভোট পড়ে মাত্র দুটো। যেখানে মোট ভোট ৩৭৬টি। আরেকটি ভোটকক্ষে ৩৭২ ভোটের মধ্যে সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত পড়ে মাত্র একটি।

অন্যদিকে, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একটি ভোটকক্ষে সকাল ৮টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়ে মাত্র তিনটি, যেখানে মোট ভোটার ৩৪০ জন।

সকাল সাড়ে ৮টায় ওই কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, ভেতরে-বাইরে আওয়ামী লীগ সমার্থিত প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা অবস্থান করছেন। পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তাদের তৎপরতা ছিল না।

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আজিমপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং হাজারীবাগের সালেহা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও ভোটারের উপস্থিতি কম দেখা গেছে।

ভোটারের উপস্থিতি কম হওয়ার জন্য সকালের শীতকে দায়ী করেছেন দক্ষিণ সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস।

ভোটগ্রহণ শুরুর সোয়া দুই ঘণ্টার মাথায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, "শীতের কারণে ভোটারের উপস্থিতি কম। ১১টার পরে কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি বাড়বে বলে আশা করছি।"

সকাল সকাল আজিমপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেন মিনু রহমান। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ইভিএম এ ভোট দেওয়া অনেক সহজ। ভোট দিয়ে মুক্ত হলাম, বাসার কাজ মনোযোগ দিয়ে করতে পারব।”

এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার রতন চন্দ্র পাল বলেন, তার কেন্দ্রের আটটি বুথে ভোটার সংখ্যা ২৬৭৮। ঠিক সময় শুরু হয়েছে ভোট। মেশিন ঠিক আছে। নিরাপত্তাও ভালো।”

সকাল পৌনে ৯টার দিকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে আজিমপুর গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন ভোটার মো. কামরান।

তিন মাস আগে মটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “ভোট দিতে আসব না! ভোট আমার অধিকার।”

হাজারীবাগ এলাকার ভোট কেন্দ্র সালেহা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বাইরে সকাল সাড়ে ৮টায় ভোটার ছিলেন হাতে গোণা।

প্রিজাইডিং অফিসার সজল আলী জানান, এ ভোট কেন্দ্রে পুরুষ-মহিলাসহ মোট ভোটার সংখ্যা দুই হাজার ৫৭৫।

এই কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর মিজানুর রহমান নামে একজন ইভিএমের বিষয়ে বলেন, “বিষয়টি বুঝতে সময় লেগেছে তবে ব্যালটে সিল মারার মজাটা নেই।”

সালেহা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বিএনপির প্রার্থীদের কোনো পোলিং এজেন্ট পাওয়া যায়নি।

পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন উত্তরের ৩২নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী আতিকুল ইসলাম মতিন।

মতিনের সমর্থক কানিজ ফাতেমা বলেন, “সকালে প্রিপারেটরি স্কুলে তারা পোলিং এজেন্ট দিতে গেলে আওয়ামী লীগের কিছু লোকজন তাদের বাধা দেয় এবং মারধর করে বের করে দেয় বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।”

তাজমহল রোড বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, মোবাইল ফোন নিয়ে ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। 

ঢাকা উত্তর সিটি করোপরেশনের ২৪ নাম্বার ওয়ার্ডের দুই কেন্দ্রে সকাল ৯টা পর্যন্ত বিএনপির পোলিং এজেন্টদের দেখা মেলেনি।