গোপীবাগে ইশরাকের প্রচারের মধ্যে সংঘর্ষ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ভোটের প্রচারের সময় গোপীবাগে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেনের কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2020, 08:58 AM
Updated : 26 Jan 2020, 10:14 AM

প্রায় ৪০ মিনিট ধরে এই সংঘর্ষের মধ্যে এক সংবাদকর্মীসহ ডজনখানেক লোক আহত হয়েছেন।

স্থানীয় বিএনপি কর্মীরা বলছেন, রোববার দুপুর ১টার দিকে ইশরাক মিছিল নিয়ে গোপীবাগে নিজের বাসার দিকে যাওয়ার সময় সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের মোড়ে ‘আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা’ তাদের ওপর হামলা করে।

এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় ৪০ মিনিট ধরে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ঢিল ছোড়াছুড়ি চলে।  কয়েকটি গাড়ি এ সময় ভাঙচুরের শিকার হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইশরাকের মিছিল যখন ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখন আওয়ামী লীগ সমর্থিক কাউন্সিলর প্রার্থী ব্যাডমিনটন মার্কার রোকন উদ্দিন আহমেদ এবং সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর পদের প্রার্থী লাভলী চৌধুরীর কর্মীরা উপস্থিত হন ওই মোড়ে।

দুই পক্ষই শ্লোগান-পাল্টা শ্লোগান দিতে থাকে। এ সময়ে হ্যান্ড মাইকেও ধানের শীষ ও নৌকা প্রতীকের স্লোগান দিতে থাকেন কর্মীরা।

এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ঢিল ছোড়াছুড়ি শুরু হয়। দুই পক্ষের কর্মীরা এ সময় রাস্তার পাশে থাকা চেয়ারও ছুড়ে মারেন।

ওয়ারী থানার ডিউটি অফিসার শিলা আকতার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারা ৯৯৯ থেকে প্রথম সংঘর্ষের খবর পান। এরপর সেখানে দ্রুত পুলিশ পাঠানো হয় এবং পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

হামলার ঘটনার পরে নিজের বাড়ির সামনে ইশরাক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “নির্বাচনকে বানচাল করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ হামলা হয়েছে। আমরা হাটখোলা থেকে টিকাটুলি হয়ে আমার বাসার দিকে ফিরছিলাম জনসংযোগ শেষে। আমার বাসা থেকে আমরা মাত্র দুই মিনিট দূরে ছিলাম।

“আমাদের ফেরার রাস্তার পাশে একটি নির্মাণাধীন বিল্ডিং থেকে আমাদের উপর আক্রমণ করা হয়। এই নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীর ক্যাম্প ছিল। এই প্রার্থীর ক্যাম্প থেকে এক দল যুবক বড় বড় ইট নিয়ে আমাদের উপর নিক্ষপ করে।এতে সাংবাদিক দের ক্যামেরা ভেঙে যায়। কয়েকজন ক্যামেরাম্যান আহত হন।”

বিএনপির জনপ্রিয়তায় ‘ঈর্ষান্বিত’ হয়েই এ হামলা চালানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইশরাক।

ইশরাকের কর্মী রকী, বিল্লাহ হোসেন, জাহিদ ইকরাম ফয়সলসহ ১৪/১৫ জনকে আহক অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। সময় টেলিভিশনের চিত্র সাংবাদিক আশরাফুল ইসলাম এ ঘটনায় আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী রোকন উদ্দিন আহমেদ পাল্টা অভিযোগ এনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ক্যম্পের ভিতরে ছিলাম। হঠাৎ ইশরাকের লোকজন আমাদের নির্বাচনী ক্যম্পের দরজা ভেঙে আমাদের উপর হামলা করে। এ সময় ইশরাকের লোকজন আট রাউন্ড গুলি ছোড়ে, তাদের হামলায় আমাদের লোকজন আহত হয়েছে। আমাদের কেউ হামলায় ছিল না।"

সংঘর্ষে আহত ছয় আওয়ামী লীগ কর্মী ইয়াছিন আরাফাত রকি (৩৫), সোরহাব হোসেন (৫৬), মশিউর (৩০), রেজুয়ান ইসলাম রাতুল (২৬), মো. রমজান (৩৫) ও রাসেল (৩০) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে নেতা-কর্মীরা জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়ারী থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) সুদীপ কুমার সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ইশরাক হোসেনের এই এলাকায় নির্বাচনী প্রচারের কথা ছিল বিকাল ৫টায়। সে অনুযায়ী পুলিশকে তারা একটি চিঠিও দিয়েছিলেন।

কিন্তু হঠাৎ করে তারা দুপুর ১টায় ওই এলাকায় নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন, যা পুলিশকে জানাননি। ফলে পুলিশের কোনো প্রস্তুতি ছিল না।

“ইশরাক হোসেন টিকাটুলি উইমেন্স কলেজের কাছে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী রোকন উদ্দিনের নির্বাচনী ক্যাম্পের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় উত্তেজনা বাড়ে। এ সময় দুই পক্ষের কথা কাটাকাটি থেকে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়।  এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হন।”