নির্বাচন কমিশন ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’: ফখরুল

ঢাকা সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচবি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Jan 2020, 08:52 AM
Updated : 23 Jan 2020, 08:52 AM

হাই কোর্ট মাজার সংলগ্ন গেইটের সামনে বৃহস্পতিবার দুপুরে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেনের প্রচারণায় অংশ নিয়ে বলেন, “নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণভাবে পক্ষপাতদুষ্ট। আপনারা দেখেছেন নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে ইশরাকের মিছিলে আক্রমন হয়েছে, তাবিথের মিছিলে আক্রমন হয়েছে।

“গত পরশু উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথের ওপর শারীরিকভাবে আক্রমণ হয়েছে। আমরা নিন্দা জানিয়েছি, প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত ঠুঁটো জগন্নাথ, অযোগ্য নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আমরা অবিলম্বে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করার আহ্বান জানাচ্ছি।”

ইশরাককে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “তার প্রতিটি পদক্ষেপ, তার বক্তব্য আজকে প্রমাণ করেছে যে, সে একমাত্র নেতা, যে ঢাকা সিটি করপোরেশনের নেতৃত্ব দিতে পারে মেয়র হিসেবে।”

ফখরুল বলেন, “এই সরকার নির্বাচনকে একটা ছেলে খেলা হিসেবে নিয়েছে, আজকে এই সরকার ইভিএম দিয়ে নির্বাচন করতে যাচ্ছে। তারা জানে ইভিএম ছাড়া তাদের নির্বাচন করা সম্ভব না। আমরা বার বার ইভিএমের বিরোধিতা করেছি। কিন্তু এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।”

‘‘আমরা জানি, জনতার মধ্যে যে জোয়ার উঠেছে, ইশরাক মানুষের মধ্যে যে ভালোবাসা সৃষ্টি করেছে, সেই ভালোবাসার শক্তি দিয়ে, জনগণের শক্তি দিয়ে সমস্ত অপশক্তিকে তারা পরাজিত করবে, এই সরকারের সমস্ত অপকৌশলকে তারা ভেঙে দেবে।”

এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “বিভিন্ন স্থানে আমাদের সমর্থিত কাউন্সিলদেরকে মারধর করা হয়েছে। দক্ষিণের একজন কাউন্সিলরকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তিনদিন পর ফেরত পাওয়া গেছে। উত্তরে মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলা হয়েছে। অনেক জায়গায় কাউন্সিলরদের প্রচারণা করতে দিচ্ছে না।

“এই সরকার সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেনি একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। নির্বাচন কমিশনও এখন পর্যন্ত তার নিরপেক্ষতা প্রমাণ করবার কোনো প্রমাণ দিতে পারে নাই। তাদের সেই যোগ্যতা নেই বলে আমরা মনে করি।”

সিটি নির্বাচনে ভোটারদের কাছে কী কী ইস্যু নিয়ে যাচ্ছেন প্রশ্ন করা হলে ফখরুল বলেন, “সিটি নির্বাচনে আমরা ঢাকা মহানগরীর উন্নয়ন ও সুন্দর করা- সেগুলো রয়েছে। সেই সঙ্গে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি- এগুলোই হচ্ছে আমাদের ইস্যু।”

ইশরাক তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, “আপনারা ১ ফেব্রুয়ারি সব ভয়ভীতি উপেক্ষা করে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যাবেন। আজকে যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, এই সরকারের সকল অপচেষ্টা এই গণজোয়ারে ভেসে যাবে ইনশাল্লাহ।”

তিনি বলেন, “স্বাধীন বাংলাদেশের মূল মন্ত্র ছিল এই বাংলাদেশের মালিক হবে জনগণ, ক্ষমতার মালিক হবে জনগণ। আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু আজকে এই দেশকে সম্পূর্ণভাবে দলীয়করণ ও পারিবারিককরণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে, একটা জমিদারী প্রথা সৃষ্টি করা হচ্ছে।”

পরে নেতাকর্মীদের নিয়ে মানুষের মধ্য ভোটের লিফলেট বিতরণ করেন ইশরাক।

ইশরাকের প্রচারণায় ছিলেন জয়নাল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, মাহবুবউদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, ফজলুল হক মিলন, নাজিমউদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া, রফিক শিকদারসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা।