বুধবার চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতি গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব প্রয়াত মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীনের নাগরিক স্মরণ সভায় একথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা রাজনীতিকরা নির্বাচনের আগে মানুষকে কাছে টানি। প্রতিশ্রুতির রঙিন বেলুন উড়াই। মনে হয় কত আপন, কত জনদরদী!
“নির্বাচন চলে গেলে আমরা প্রতিশ্রুতির কথা অবলীলায় ভুলে যাই।”
নির্বাচন আসন্ন হলে রাজনীতিকদের জনদরদী হয়ে ওঠা যে অভিনয়, তা ভোট শেষে জনগণ বুঝে ফেলে বলেও মনে করেন চারবার সাংসদ হওয়া আওয়ামী লীগের এই নেতা।
কাদের বলেন, “এদেশে অনেক জনপ্রতিনিধি আছেন, জনগণের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক যখন ভাবি তখন মনে হয় যে, আমাদের সব জনপ্রতিনিধি জনগণকে ভালোবাসে না। জনগণের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য কাজ করে না।”
মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদীনের বিভিন্ন কাজের কথা স্মরণ করে সেতু ও সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “একজন সৈনিক হয়েও জয়নুল আবেদীন ছিলেন আলাদা একজন মানুষ। জনপ্রতিনিধির চেয়েও জনগণের সাথে তার সম্পর্ক ছিল গভীর ও নিবিড়। এই গ্রামে এলে বোঝা যায়, একজন মানুষ শেকড়ের টানে তার জন্মভূমির জন্য কী করতে পারেন!”
‘বীর বিক্রম’ উপাধি পাওয়া এই সেনা কর্মকর্তাকে নিয়ে তিনি বলেন, “জয়নুল আবেদীন সরাসরি রাজনীতি করেননি, কিন্তু একজন রাজনীতিকের যে গুণাবলী থাকা দরকার, তার চেয়ে অনেক বেশি কমিটমেন্ট সম্পন্ন, তার চেয়ে অনেক বেশি গুণাবলীতে সমৃদ্ধ পরিপূর্ণ একজন মানুষ ছিলেন তিনি।”
জয়নুল আবেদীন ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘বিশ্বস্ত সাথী’ মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “তাকে আমি দেখেছি নেত্রীর আশপাশে সব সংকটের ‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’ হিসেবে। ক্রাইসিসে আবেদীন ছুটে আসতেন।
“নেত্রী বলতেন, আমাকে যদি কখনও না পাও, টেলিফোনেও না পাও, আবেদীনের কাছে মেসেজ দেবে। সময় মতো আবেদীন আমাকে জানাবে। সেটাই হয়েছিল বারবারে। কোনো বার্তা দিতে হলে, নেত্রীকে না পেলে আবেদীনের কাছে দিতাম।”
সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৭ ডিসেম্বর মারা যান প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন। তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর।
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতি গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
আমীর খসরুর বক্তব্য ’মিথ্যা’: হাছান মাহমুদ
চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জয় নিয়ে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর এক বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
নাগরিক শোক সভায় তিনি বলেন, “১৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম-৮ আসনে যে উপনির্বাচন হয়েছে সেই নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোসলেম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছেন।
“গতকাল দেখতে পেলাম বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সেখানে নাকি যারা বিদেশ থাকেন প্রবাসী ও মৃত ব্যক্তিরাও ভোট দিয়েছেন।”
আমীর খসরুর কাছে প্রশ্ন রেখে হাছান মাহমুদ বলেন, “চট্টগ্রাম-৮ আসনের মহানগর অংশে ভোটারের সংখ্যা প্রায় পৌনে ৪ লাখ। তার মধ্যে মোছলেম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী মাত্র ৩৬ হাজার ভোট পেয়েছেন।
“যদি ভোট কেন্দ্র দখল হত এবং তার ভাষ্য অনুযায়ী এই ধরনের ভোটাররা ভোট দিত তাহলে মোসলেম উদ্দিন আহমেদ ৩৬ হাজার নয়, ১ থেকে ২ লাখ ভোট পেত।
“এই ধরনের মিথ্যা ভাষণ দিয়ে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে। তাদের বলব, এ ধরনের মিথ্যে ভাষণ দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে কোনো লাভ হবে না। জনগণ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সাথে রয়েছে।”
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “এখানে পরিপূর্ণ সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমেদ নির্বাচিত হয়েছেন। পরিপূর্ণ সুষ্ঠু ভোট হয়েছে বিধায় ভোট প্রদানের হার ২৫ শতাংশের নিচে। অন্যথায় ভোট প্রদানের হার আরও অনেক বেশি হত।”