‘কষ্টে’ আছেন ওবায়দুল কাদের

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থীদের সঙ্গে রাস্তায় হেঁটে ধানের শীষের জন্য ভোট চাইছেন, সেখানে ভোট নিয়ে ‘কিছুই করতে না পারায় কষ্টে আছেন’ বলে জানালেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2020, 12:34 PM
Updated : 20 Jan 2020, 01:07 PM

সোমবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

সিটি নির্বাচনে সব দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হয়েছে কি না তা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমার নিজেরই তো অভিযোগ রয়েছে। বিএনপির সেক্রেটারি জেনারেল আজকে প্রচারণা চালাচ্ছেন, আমি আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারি পারছি না।”

নিজের ক্ষেত্রে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ না পাওয়ার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “আমি সেক্রেটারি জেনারেল; আরেকটা পার্টির সেক্রেটারি জেনারেল ক্যাম্পেইন করবে আমার প্রধান প্রতিপক্ষ দলের, অথচ আমি আজকে ক্যাম্পেইন করতে পারছি না, ভোট চাওয়ার কোনো ক্যাম্পেইনেও অংশ নিতে পারছি না। আমি আমাদের নির্বাচনী অফিসগুলোতে পর্যন্ত যাইনি। আমি নিয়ম মেনে চলছি।”

দলীয় প্রার্থীদের জন্য ভোটের প্রচারে অংশ নিতে না পারায় হতাশা জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমার তো একটু কষ্ট আছে। আমি যেতে পারছি না। …যতক্ষণ নিয়ম আছে মেনে চলব। পরেরটা পরে দেখা যাবে।”

স্থানীয় নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের প্রচারে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরিতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করা হবে কি না সে প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, “সংসদের কথাটা বলতে গেলে নানান কথা আসে, পৃথিবীর কোনো উন্নত গণতান্ত্রিক দেশে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা ক্যাম্পেইন করতে পারে না এ রকম বিধান নেই। আমাদের এখানে এটা কেন হল তাতো জানি না। তারা এটা কেনইবা রাখছেন তাও জানি না।”

তবে নির্বাচনের আগে আরপিও সংশোধনের দাবি তুলছেন না বলে সাংবাদিকদের জানান তিনি।

সিটি নির্বাচন নিয়ে নানা অভিযোগ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কাদের বলেন, “বিএনপি ছাড়া আর কেউ অভিযোগ করবে না। বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যর্থ বিরোধী দল হচ্ছে বিএনপি।

“তারা রাজপথে আন্দোলন করে বিরোধী দল হিসেবে সফলতা পায়নি। নির্বাচনেও তারা পরাজিত হয়েছে, ব্যর্থ হয়েছে। এখন তারা নালিশনির্ভর দলে পরিণত হয়েছে। যে কোনো ব্যাপারে অভিযোগ ও নালিশ করা তাদের মজ্জাগত হয়ে গেছে।

“বিএনপিকে গ্যারান্টি দিতে হবে নির্বাচনে আপনারা জিতবেন, তাহলে যদি বন্ধ হয় এ সব কল্পিত অভিযোগ।”

সিটি ভোটের প্রচারে নেমে ধানের শীষের ‘গণজোয়ার এসেছে’ বলে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার এটা দিবা স্বপ্নের মতো, এর কোনো বাস্তবতা নেই। ১ ফেব্রুয়ারি বোঝা যাবে গণজোয়ার কোন দিকে। গণজোয়ার ধানের শীষের পক্ষে না নৌকার পক্ষে সেটা সেদিন প্রমাণ হবে।

“দিবাস্বপ্ন দেখে তো লাভ নেই। তারা দিবাস্বপ্ন দেখতে পারেন এ রকম দিবাস্বপ্ন ও গণজোয়ারের কথা জাতীয় নির্বাচনের আগেও তারা বলেছেন, কিন্তু বাস্তবটা ভিন্ন।”

ভোটে কারচুপি হলে বিএনপির পক্ষ থেকে সরকার পতন আন্দোলনের ডাক দেওয়ার যে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে তার প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেন,“মির্জা আব্বাসের মনে যে কী আছে, তা আমরা কেউ জানি না।“

মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রথম আলো পত্রিকা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, তা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।

জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা এই ইস্যুতে কিছু বলতে চাই না। এটা আদালতের বিষয়। বিচার বিভাগ স্বাধীন কর্তৃত্বপূর্ণ, তাদের যে ক্ষমতা রয়েছে সেখানে আমাদের সরকার বা দলের কিছু বলার নেই।

“জামিন দিলেও আদালত দেবে, মুক্তি দিলেও আদালত দেবে। সরকারের এখানে ইচ্ছা-অনিচ্ছার কোনো ব্যাপার নেই। আমরা কেন এখানে জড়াতে যাব? এটাতো সরকারের সাথে তাদের কোনো দ্বন্দ্বের কিছু না। এটা একটা ঘটনা ঘটেছে। তার প্রেক্ষিতে মামলা হয়েছে। তার ভিত্তিতে আদালত পরোয়ানা জারি করেছে। তারা আবার জামিন নিয়েছে৷ এটা সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ার।”