প্রমাণ হয়েছে, এই ইসি অযোগ্য: ফখরুল

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অযোগ্যতার কারণেই ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণের তারিখ নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2020, 06:49 AM
Updated : 19 Jan 2020, 06:49 AM

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়ার উর রহমানের ৮৪তম জন্মবার্ষিকীতে রোববার সকালে নেতাকর্মীদের নিয়ে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন ফখরুল।

এ সময় ঢাকায় বিএনপি মনোনীত দুই মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেন ও তাবিথ আউয়ালও ছিলেন।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে আগামী ৩০ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের দিন রেখেছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ওইদিন সরস্বতী পূজা থাকায় জোরালো দাবির মুখে সূচি পিছিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন ঠিক করা হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, “নির্বাচন কমিশন যে অযোগ্য, ব্যর্থ এবং তারা যে আসলেও একটি নির্বাচন পরিচালনা করার যোগ্যতা রাখে না, তার প্রমাণ হচ্ছে তারা এমন একটা দিনে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেছিল সেদিন হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি বড় পূজা ছিল। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে যে, যেখানে পূজোগুলো হয় সেখানেই নির্বাচনের কেন্দ্রগুলো। ফলে সেখানে অবশ্যই একটা সমস্যা তৈরি হয়েছিলো।

“নির্বাচন কমিশনের অযোগ্যতার কারণেই এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।”

ঢাকা সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বেশি সুযোগ পাচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “এই নির্বাচনেও একটি দলই প্রাধান্য পাচ্ছে এবং যে অযোগ্য নির্বাচন কমিশন… তারা কোনো রকম ব্যবস্থা নিতে সক্ষম নয়, কারণ তাদের সেই যোগ্যতা নেই।”

“তারা যে ইভিএমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে চাচ্ছে সেটা হচ্ছে আরেকটি অপকৌশল। বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করে ফেলার কৌশল মাত্র। জনগণের রায় কখনোই ইভিএমের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে জনগণের সামনে আসবে না।”

প্রতিষ্ঠাতার জন্মবার্ষিকীতে দলের লক্ষ্য প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, “আজকে আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করে শপথ নিয়েছি যেকোনো ত্যাগের বিনিময় হলেও আমরা গণতন্ত্রকে মুক্ত করব, আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব এবং বাংলাদেশে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ অনুযায়ী একটি সত্যিকার অর্থে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করব, তার ১৯ দফাকে বাস্তবায়িত করব। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের দর্শনের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”

১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীতে জন্মগ্রহণ করেন জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালে পট-পরিবর্তনের পর জিয়া সেনাবাহিনী প্রধান এবং পরবর্তিতে রাষ্ট্রপতি হন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে কিছু সেনাসদস্যদের হাতে নিহত হন জিয়াউর রহমান।

রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর জিয়া ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন।

সকাল ১০টায় বিএনপি মহাসচিব দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে শেরেবাংলা নগরে জিয়ার সমাধিস্থলে আসেন শ্রদ্ধা জানাতে। কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের পরে ফাতেহা পাঠ করে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করেন।

বিএনপি ছাড়াও বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকেও জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

জিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাব নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলা দিনব্যাপী বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে। বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা হওয়ার কথা রয়েছে।

দিনটি উপলক্ষে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভোরে দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং সংবাদপত্রে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে।