চাকরি রক্ষা করাটাই সিইসির কাছে মুখ্য: রিজভী

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদাকে ‘সরকারের আজ্ঞাবাহী’ আখ্যায়িত করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2020, 09:00 AM
Updated : 16 Jan 2020, 09:00 AM

নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বলেন, “সিইসি এমন একজন ব্যক্তি, এমন একজন অনুগত সরকারের, উনি বলেছিলেন, দলগুলো না চাইলে ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। তারপরও ইভিএম ব্যবহার করছেন।

“কারণ শেখ হাসিনা যেটা চায় সেটাই তিনি করবেন। উনি হলেন আজ্ঞাবাহী দাশানুদাশ। এই যে গণতন্ত্র হত্যার ধারাবাহিকতা শুরু হয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচনকে জলাঞ্জলি দিয়ে, তার প্রধান নায়ক এই সিইসি কেএম নূরুল হুদা।”

রিজভী বলেন, “সিইসি কথা অনেক ভালো ভালো বলেন… বিধি লঙ্ঘন, অমুক করা, তমুক করা- এসব কথা বলবেন। তারপরও আপনি দেখবেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ধারাবাহিকভাবে নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করবে সেই দিকটায় তার চোখ অন্ধ হয়ে যায়, সেই চোখটা তার খোলা থাকে না।

“কিন্তু বিএনপির যদি সামান্য ক্রটি দেখে বা ক্রটি না দেখলেও ক্রুটি বানিয়ে সেখানে তিনি ব্যবস্থা নেন।।”

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “আমরা চাই, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন। তাদের সেই ক্ষমতা আছে। কিন্তু সেই ক্ষমতা সিইসি প্রয়োগ করতে চান না। কারণ উনি মনে করেন তার চাকরি দিয়েছেন শেখ হাসিনা ও তার সরকার। তার কাছে চাকরি রক্ষা করাটাই মুখ্য, গণতন্ত্র রক্ষা বা সুষ্ঠু নির্বাচন করানোটা মুখ্য নয়।”

ইভিএম ভোট ডাকাতির মেশিন

রিজভী বলেন, “ইভিএম দিয়ে ডিজিটাল ভোট ডাকাতির মহড়া হল গত ১৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম-৮ আসন ও হাইমচর উপজেলা নির্বাচনের ভোটে। ওটা ছিল প্রস্তুতি ম্যাচ। সেখানে প্রমাণ হয়েছে ভোটার ছাড়াই ইভিএমে নৌকা প্রার্থীদের কিভাবে পাস করানো যায়। আমরা মনে করি ইভিএম হচ্ছে গত ২৯ ডিসেম্বর মধ্য রাতে নির্বাচনের মতো ভোট ডাকাতির আরেকটি কৌশল। এটা হচ্ছে ভেল্কিবাজীর মেশিন, ভোট লুটের মেশিন।”

তিনি বলেন, “ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনও চট্টগ্রামের মতো দখলের নীলনকশার প্রস্তুতি কিনা তা নিয়ে জনমনে সংশয় দেখা দিয়েছে। ঢাকাতেও সন্ত্রাসী কার্য্ক্রম শুরু হয়েছে। প্রচারণার চলার মধ্যে গ্রেপ্তার করবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এখন গ্রেপ্তার চলছে, অভিযানও চলছে, আক্রমণ চলছে, হামলা চলছে এবং হামলার মাধ্যমে একটা ভয়ভীতির পরিবেশ তারা সৃষ্টি করেছে।”

ঢাকা দক্ষিণে বুধবার নির্বাচনী প্রচারণা থেকে দলের যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজকে লালবাগ থেকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তার মুক্তির দাবিও জানান তিনি।

‘দুদক সরকারের ধোপাখানা’

দুর্নীতির মামলায় দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনের বিচার শুরুর সমালোচনায় রিজভী বলেন, “আজকে ইশরাক হোসেনের নামে মামলা কেন? দুদক হচ্ছে শেখ হাসিনার একটা লন্ড্রি, একটা ধোপাখানা। এখানে আওয়ামী লীগের লুটেরাদেরকে সাফ করে, পরিশুদ্ধ করে আর বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয়… ঠিক যেমন ইশরাকের বিরুদ্ধে। একজন বাচ্চা ছেলে তার বিরুদ্ধে এটা দিল। এর আগেও তারা বিভিন্ন নির্বাচনে এসব কাজ করেছে।

“এসব তো নির্বাচন কমিশন দেখতে পারত যে, আর কয়েকদিন পরে নির্বাচন, এখন কেন ইশরাকের বিরুদ্ধে এই মামলা দিচ্ছে। এটা পরিকল্পিত, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা হচ্ছে। কমিশন কী দেখতে পারত না? সেটা এই নির্বাচন কমিশন দেখেনি। কারণ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় যে বোতাম টিপে সেই বোতামের ওপরই সিইসি নির্ভর করেন, উনি আর কারো উপর নির্ভর করেন না।”

সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, সহ দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।